নামাজ। নামাজের উপকারিতা।
মহান আল্লাহতালা মানুষ এবং জিন জাতিকে একমাত্র তার এবাদত করার জন্যই সৃষ্টি করেছেন। এই মানুষকে খাঁটি বান্দা হিসেবে তৈরি করার জন্য মহান আল্লাহ তাআলা ইসলামে কয়েকটি নির্দিষ্ট এবাদতকে ফরজ করা হয়েছে। এই কয়েকটি ফরজ ইবাদতের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ একটি এবাদত হচ্ছে নামাজ। এবার আমরা নামাজ সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করব ইনশাল্লাহ। যদি কেউ এবাদত সম্পর্কে না জেনে থাকেন তবে এখান থেকে জেনে আসতে পারেন। ইবাদত বলতে কি বুঝায়:- ইবাদাত শব্দের অর্থ বন্দীগি বা দাসত্ব করা। তাই মানুষকে মহান আল্লাহতালা শুধু দাসত্ব করার জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে, তখন মানুষ কখনো এবং কোন অবস্থাতেই আল্লাহর দাসত্ব হতে মুক্ত হতে পারে না। সামান্য সময়ের জন্য নয়। সর্বাবস্থায় মানুষ আল্লাহর দাস। মানুষ কখনোই এ কথা বলতে পারে না যে এখন আমরা আল্লাহর এবাদত করব এবং পরবর্তীতে আমরা মুক্ত। যেহেতু মানুষ মহান আল্লাহতালার মানুষকে দাসত্ব করার জন্যই সৃষ্টি করেছেন, সুতরাং মানুষের সমগ্র জীবনী তার গোলামী ও দাসত্বে অতিবাহিত হাওয়াই একান্ত বাঞ্ছনীয় জীবনের কোন একটি মুহূর্ত্বে মানুষ তার এবাদত ও দাসত্ব হতে মুক্ত হতে পারে না। দুনিয়ার কাজকর্ম পরিত্যাগ করে এক কোনায় বসে আল্লাহু আল্লাহু করার নাম ইবাদত নয়। বরং এই দুনিয়ায় আপনি যে কাজ করুন না কেন তা আল্লাহর আইন ও বিধান অনুসারে করার অর্থই হচ্ছে ইবাদাত। মানুষের স্বয়ং নিদ্রা, জাগরণ, বিশ্রাম, পানাহার, চলাফেরা, মোটকথা রান্নাঘর থেকে আরম্ভ করে পার্লামেন্ট পর্যন্ত যা কিছুই হবে তা মহান আল্লাহর আইন ও বিধান অনুযায়ী করার নামই হচ্ছে ইবাদত।আপনার স্ত্রী-পুত্র ভাই ভগ্নি এবং আত্মীয়-স্বজনের সাথে আল্লাহর নির্দেশ অনুযায়ী ব্যবহার করা উচিত। বন্ধুবান্ধবের সাথে হাসি তামাশা ও কথাবার্তা বলার সময় আমাদের স্মরণ রাখতে হবে যে, আমরা আল্লাহর দাসত্ব শৃঙ্খল হতে মুক্ত নই। আমাদের অধিকারের টাকাপয়সা আদান প্রদানের সময় আমাদের প্রত্যেকটি কাজের কথায় আল্লাহর বিধি-নিষেধ লক্ষ রাখতে হবে এবং কখনোই আল্লাহর নির্ধারিত সীমা অতিক্রম করা যাবেনা। মানুষকে সর্ব সব সময় আল্লাহকে ভয় করে পাপ কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে, অন্ধকার রাত্রি গভীর জঙ্গল কেউ নেই এসব জায়গায় আল্লাহর আইন ও বিধান অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করার নামে ইবাদাত। সততা ও ন্যায় নীতি রক্ষা করার জন্য যদি ভয়ানক ক্ষতিগ্রস্ত হতে হয় তথাপি মানুষকে কেবল আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় এই ক্ষতি স্বীকার করতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা বোধ করা যাবে না। অতএব দুনিয়ার বিপুল কর্মজীবন পরিত্যাগ করে ঘর বা মসজিদের কোণে বসে তাজবি পড়া এবাদত বলা যায় না। বস্তুত দুনিয়ার এই গোলকধাঁধায় জড়িত হয়ে আল্লাহর বিধান অনুযায়ী জীবন যাপন করার নামই ইবাদত । মুখে আল্লাহু আল্লাহু শব্দ উচ্চারণ করা এবং জীবনের কর্মক্ষেত্রে আল্লাহকে ভুলে যাওয়া এবং তার বিধান ও আইন অনুযায়ী কাজ না করা, একে জিকির বলে না। দুনিয়ার কাজকর্ম ও ঝামেলার কঠিন জর্জরিত হলেও আল্লাহকে সর্বাবস্থায় সরণ রাখাই আসল আল্লাহর জিকির ।
মহান আল্লাহ তা'আলা সূরা আল-যুমার 10 নম্বর আয়াতে বলেন
“ নামাজ পূর্ণরূপে আদায় হয়ে গেলে তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ো; আল্লাহর দান জীবিকা উপার্জনের চেষ্টা করো করো এবং এ প্রচেষ্টা ব্যাপদেশে আল্লাহকে খুব বেশি করে স্মরণ করো। তবে সম্ভবত তোমরা কল্যাণ লাভ করতে পারবে’’নামাজের উপকারিতা
মানুষের মনে একটি শয়তান সব সময় উপস্থিত থাকে; সে সবসময় মানুষকে নিজের দাস বানাতে চেষ্টা করে শয়তানের এই প্ররোচনা ও গোলক ধাঁধার জাল ছিন্ন করার জন্য মানুষকে প্রত্যহ বারবার এ কথা স্মরণ করিয়ে দেয়া একান্ত আবশ্যক যে, তুমি কেবলমাত্র মহান আল্লাহতালার দাস, তিনি ছাড়া তুমি আর কারো নও, না শয়তানের, না কোন মানুষের। একথাই মানুষের মনে জাগিয়ে তুলে নামাজ। মানুষ আল্লাহর দাস একথা মানুষকে বারবার স্মরণ করিয়ে দেওয়া নামাজের প্রথম উপকরণ। এজন্যই পবিত্র কোরআনে নামাজ কে ‘জিকির’ নামে অভিহিত করা হয়েছে অর্থাৎ এর দ্বারা আল্লাহকে স্মরণ করা হয়।
সালাতের উপকার প্রধানত ৬ ভাগে ভাগ করা যায়।
২।আত্মিক উন্নতি।
৩। শারীরিক উপকার।
৪। সামাজিক অবস্থার উন্নতি করে।
৫।সত্যবাদী হতে শেখায়।
৬। দৈনিন্দন কাজের মধ্যে সত্যবাদিতা এবং সততাকে বাড়ায়।
নামাজ বা সালাত হল একটি জীবন ধর্ষণ সালাত আপনার আত্মিক অবস্থা কে উন্নতি করবেএবং শারীরিক উপকার করবে। সালাত মানুষের বিশ্বাস কে বাড়িয়ে দেয়, বিশ্বাসকে শক্তিশালী এবং সুদৃঢ় করে। পবিত্র কুরআনের সূরা আনফালের 2 নম্বর আয়াতে মহান আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ সত্তিকারের বিশ্বাসী তারাই যাদের হৃদয় কম্পিত হয় যখন আল্লাহকে স্মরণ করা হয়। আর যখন আল্লাহর আয়াত পাঠ করা হয়, এটা তাদের ঈমান বৃদ্ধি করে এবং তারা তাদের প্রতিপালকের ওপর নির্ভর করে। পবিত্র কুরআনে সূরা ফাতিহার 5 থেকে 7 নাম্বার আয়াতে মহান আল্লাহতালা বলেছেন “আমরা তোমারই ইবাদত করি এবং তোমারই কাছে সাহায্য প্রার্থনা করি, আমাদেরকে সঠিক সরল পথ দেখা ও যে পথে তোমার প্রিয়জন চলে গেছে আমাদের কেউ সেই পথে পরিচালিত করো, সেই পথে নয় যে পথে গজব অবতীর্ণ হয়েছে এবং যারা পথভ্রষ্ট হয়েছে"। একজন সত্তিকারের মুসলিম সে তার দিনের প্রথম কাজ শুরু করে ফজরের সালাতের মাধ্যমে। এবং একজন মুসলিম সালাত আদায় করে দিনের মাঝখানে এবং সে ঘুমিয়ে যাওয়ার পূর্বে।
নামাজ আদায় করার সময় যে সমাবেশ এটা আমাদের ভাতৃত্ববোধ বাড়ায় মাহাত্ম্য ভূত বাড়ায় একতা বাড়ায় এবং এটা সাম্যবাদের এক অনন্ত দৃষ্টান্ত । সংহতি বৃদ্ধি পায় নামাজ আদায় করতে গেলে সবাই একত্রিত হয় এবং তাদের মধ্যে ভালোবাসার ভূত জোরদার হয় ।
সূরা হুজরাতের ১৩ নম্বর আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছেঃ
হে মানবজাতি আমি তোমাদের সৃষ্টি করেছি একজন পুরুষ ও একজন নারী হতে, পরে তোমাদের বিভক্ত করেছি বিভিন্ন জাতী ও গোত্রে, যাতে তোমরা অপরের সাথে পরিচিত হতে পারো, এ জন্য নয় যে তোমরা পরস্পরকে ঘৃণা করবে। আর তোমাদের মধ্য থেকে আল্লাহর কাছে সেই ব্যক্তি অধিক মর্যাদা সম্পন্ন যে তোমাদের মধ্যে অধিক মুত্তাকী, অধিক ন্যায় পরায়ণ নিশ্চয়ই আল্লাহ সকল কিছু জানেন এবং সমস্ত বিষয়ের ওপর খবর রাখেন। মহান আল্লাহতালা যেটা দিয়ে আমাদের বিচার করবেন, সেটা গোত্র নয়, ধর্ম বিশ্বাস নয়, সম্পদ নয়, লিঙ্গ নয়, সেটা হলো তাকওয়া । অর্থাৎ ন্যায় পরায়নতা আল্লাহকে মেনে চলা। ধার্মিকতা । পবিত্র কুরআনের সূরা হুমাজাহ এক নাম্বার আয়াতে উল্লেখ আছে:
“দুর্ভোগ তাদের যারা মানুষকে সামনে পিছনে নিন্দা করে থাকে” নামাজ আমাদের বিরত রাখে মানুষের নিন্দা করা থেকে । পবিত্র কুরআনের সূরা হুজরাতের 11 এবং 12 নম্বর আয়াতে উল্লেখ করা আছে :
“তোমাদের মধ্যে কোন পুরুষ জানো অপর পুরুষকে উপহাস না করে, কারণ যাকে উপহাস করা হয় সে উপহাসকারী হইতে উত্তম হতে পারে । কোন নারী যেন অপর নারীকে উপহাস না করে যাকে উপহাস করা হয় সে উপহাসকারিণী হইতে উত্তম হতে পারে, একে অপরের প্রতি তোমরা দোষারোপ করো না এবং তোমরা একে অপরকে মন্দ নামে ডেকো না । হে মুমিনগণ তোমরা অনুমান হতে দূরে থাকো, কারণ অনুমান কোন কোন ক্ষেত্রে পাপ, একে অপরের গোপনীয় বিষয় সন্ধান করোনা, এবং একে অপরের পশ্চাতে নিন্দা করো না , পেছন থেকে নিন্দা করো না, তোমাদের মধ্যে কেউ কি মৃত ভাইয়ের গোশত খেতে চাইবে” পবিত্র কুরআন বলছে তোমরা যদি কেউ পিছনদিকে নিন্দা করো তাহলে তোমরা মৃত ভাইয়ের গোশত খেলে। মৃত ভাইয়ের গোশত খাওয়া হলো দ্বিগুণ অপরাধ। কারণ খাদ্য হিসেবে মানুষের গোস্ত খাওয়া একটা অপরাধ, এমনকি ক্যানিবালরা যারা মানুষের গোশত খায় তারাও কখনো তার মৃত ভাইয়ের গোশত খায় না । কোরআন বলছে যদি পিছন দিক থেকে নিন্দা করেন তাহলে দ্বিগুণ অপরাধ করছেন,অপরাধ টা এমন যেন আপনি মৃত ভাইয়ের গোশত খাচ্ছেন। কোন প্রমাণ ছাড়া কারো পরনিন্দা করা এটা পাপ। আরো কারো পিছন থেকে নিন্দা করা এটা দ্বিগুণ পাপ। নামাজ এটা আমাদের ব্যবসা ক্ষেত্র এবং দৈনিন্দন কাজের মধ্যে সত্যবাদিতা এবং সততাকে বাড়ায়। সূরা আনকাবুত ৪৫ নম্বর আয়াতে মহান আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ
“তুমি আবৃতি করো সেই কিতাব হতে যা তোমার প্রতি প্রত্যাদেশ করা হয় এবং সালাত কায়েম করো কারণ নিশ্চয়ই সালাত অন্যায় অশ্লীলতা হতে মানুষকে বিরত রাখে’’সূরা ইসরা ৮১ নাম্বার আয়াতে উল্লেখ আছেঃ “বল সত্য এবার উপস্থিত হয়েছে এবং মিথ্যা বিলুপ্ত হয়েছে কারণ মিথ্যাটা প্রকৃতিগতভাবেই একদিন ধ্বংস হয়ে যাবে”। সালাত আমাদের সত্যবাদী হতে শেখায়। সূরা বাকারার 42 এবং 43 নম্বর আয়াতে বলা হয়েছেঃ তোমরা সত্যকে মিথ্যার সাথে মিশ্রিত করোনা এবং জেনে শুনে সত্য গোপন করোনা। কোরআন আমাদের সত্যবাদিতা শিখায়, সুরা বাকারার ১৮৮ নাম্বার আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছেঃ
তোমরা নিজেদের মধ্যে একে অন্যের সম্পদ অবৈধ পদ্ধতিতে খেওনা এবং শাসকদের সামনেও এগুলোকে এমন কোন উদ্দেশ্যে পেশ করুণা যার ফলে ইচ্ছাকৃতভাবে তোমরা অন্যের সম্পদ এর কিছু অংশ খাওয়ার সুযোগ পেয়ে যাও। পবিত্র কুরআন বলছেঃ ঘুষ দেওয়া এবং নেওয়া দুটোই নিষিদ্ধ। পবিত্র কুরআন আমাদের শিখিয়ে দেয় কিভাবে সৎ জীবন যাপন করতে হবে। কুরআন মানুষের জীবনে শান্তি এনে দেয়। পবিত্র কুরআনের সূরা রদের ২৮ নাম্বার আয়াতে উল্লেখ আছেঃ নিশ্চয়ই যখন আল্লাহকে স্মরণ করা হয় হৃদয় তখন শান্তি খুঁজে পায় এবং প্রশান্ত হয় । যখন আল্লাহকে স্মরণ করবেন যখন নামাজ আদায় করবেন আপনি তখন খুবই শান্তিতে থাকবেন, আপনার হৃদয় প্রশান্ত হবে। নামাজ হলো আল্লাহর সাথে যোগাযোগের শ্রেষ্ঠ উপায়। সুরা বাকারার ১৫৩ নম্বর আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছেঃ হে মুমিনগণ তোমরা ধৈর্য্য ও সালাতের মাধ্যমে তোমরা আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করো। নিশ্চয়ই আল্লাহ সুবহানাতায়ালা ধৈর্যশীলদের সাথে আছেন।
এইসব উপকারীতারা পাশাপাশি আমরা নামায থেকে পাই শারীরিক উপকারিতা। নামাজ আদায় করার সময় আমরা যখন রুকুতে যাই অর্থাৎ মাথা নোয়ায় শরীরের উপরের অংশ তখন অতিরিক্ত রক্ত প্রবাহিত হয্ মেরুদন্ড তখন হয়ে যায় নমনীয়, মেরুদন্ড এর বিভিন্ন নার্ভ তখন শক্তিশালী হয়, মেরুদন্ড বা পিঠের ব্যথা দূর হয়ে যায়, এতে করে দূর হয় পেট ফাঁপা সমস্যাগুলো। এরপরে যখন উঠে দাঁড়াই অর্থাৎ সোজা হয়শরীরের উপরের অংশে যেটুকু তে রক্ত প্রবেশ করেছে, এটার প্রবাহ তখন স্বাভাবিক হয়, শরীরে তখন রিলাক্স হয়। যখন আমরা সেজদা দেই যখন আমরা কপাল মাটিতে রাখিনি এটা হলো সালাতের সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ অংশ, এটা হলো সালাতের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ। প্রত্যেকদিনমানুষের শরীরতার চারপাশের বিভিন্ন ইলেকট্রো স্ট্যাটিক চার্জের সংস্পর্শে আসে এই চার্জ তারপরে গিয়ে পৌঁছায় মানুষের নার্ভাস সিস্টেমের আর সেখানেই জমা হয়ে থাকে। আর এই অতিরিক্ত ইলেকট্রোস্ট্যাটিক চার্জ বের করে দেওয়া প্রয়োজন, তা না হলে আপনার মাথা ব্যাথা করবে, পিঠে ব্যথা করব, মাংসপেশিতে টান পড়বে, আমরা এর থেকে নিরাময়ের জন্য ট্রাংকুলাইজার বা বিভিন্ন ধরনের ঔষধ ব্যবহার করে থাকি। এই অতিরিক্ত ইলেকট্রোস্ট্যাটিক চার্জ, আমাদের শরীর থেকে বের করে দিতে হবে। যেমন ধরুন এমন কোন যন্ত্র যেখানে প্রচুর বিদ্যুতের প্রয়োজন হয়, সেখানে দেখা যায় সাধারণত থ্রি পিন প্লাগ আছে, অর্থাৎ তৃতীয় তারা টা মাটিতে চলে যায় আর্থিং করা হয়। একই ভাবে আমরা যখন সিজদায় যাই আমাদের কপাল যখন মাটিতে ঠেকাই, শরীরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে ব্রেন আর ব্রেনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে ফ্রন্টাল লোব, সেটা মাটিতে ঠেকানো হয়।এই সময় অতিরিক্ত ইলেকট্রোস্ট্যাটিক চার্জ মাটিতে চলে যায়।তার মানে এই নয় যে আমরা যদি কপালের নিচে হাত রাখি তাহলে আমরা ইলেকট্রিক সব খাব।সেজদার সময় আমরা বীর্যে গুরুত্বপূর্ণ অংশ ফ্রন্টাল লোব আমরা মাটিতে ঠেকাই, বেনের যে অংশটা চিন্তা করে সেটাও বলে থাকে না সেটা তখন থাকে ফ্রন্টাল লবে। সেজন্যই আমরা সালাতের মধ্যে সেজদা করি।যখন আমরা সেজদা যাই তখন ব্রেনে অতিরিক্ত রক্ত সঞ্চালিত হয়, এটা আমাদের ব্রেনের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। যখন আমরা সেজদা করি তখন আমাদের মুখে ও ঘাড়ে অতিরিক্ত রক্ত সঞ্চালিত হয়।এতে আমাদের মুখমন্ডলে রক্ত প্রবাহের মাত্রা বেড়ে যায়,বিশেষ করে এটা আমাদের জন্য শীতকালে বিশেষ উপকারী।বিভিন্ন অসুখ থেকে আমরা বাঁচতে পারি যেমন ফাইব ফাইব ফ্রাইবো সাইটিস ও চিলব্রেইন। সারাদিন সাধারণত আমরা সোজা হয়ে দাড়িয়ে থাকি, আর মেঘলিনারি সাইনাস এটা ব্রেনে থাকে শরীরের উপরের অংশে আমরা সোজা হয়ে দাড়িয়ে থাকি বলে চলাচল হয় না। আমরা যখন সিজদায় যাই, এটা এরকম যেন ভরা পাত্র উল্টে দিলাম। এতে করে মেঘলিনারি সাইনোসাইটিস সঞ্চালিত হয়। এছাড়াও এতে আমাদের শরীরে ব্রেনেজ তৈরি হয়।এছাড়াও সেজদা তাদের জন্য প্রাকৃতিক চিকিৎসা যারা বন্টাইটিজ চিকিৎসায় ভুগে থাকেন। এতে করে বঙ্কিল টিজে রস জমা হয়ে থাকতে পারে না। এতে করে অনেক পালবনাইজিস আমাদের শরীরে রস ছাড়াও বিভিন্ন ধুলাবালি জমা হতে পারে। সেজদার মাধ্যমে এই সব রোগের প্রতিকার পাওয়া যায়। আমরা যখন নিঃশ্বাস নেই তখন আমাদের ফুসফুসের দুই-তৃতীয়াংশ ব্যবহার করে থাকি। আর বাকি এক তৃতীয়াংশ জায়গা যেখানে বাতাস থেকে যায়, বাকি দুই তৃতীয়াংশের তাজা বাতাস ঢুকে এবং বের হয়ে যায়। বাকি 1% বাতাসকে বলে রে-সটলিয়ার। যখন আমরা সেজদা করি তখন আমাদের তলপেট চাপ দেয় ড্রাইফ্রামকে আর ড্রাইফ্রাম চাপ দেয় ফুসফুসের নিচের অংশকেআর এতে ফুসফুসের রে-সটলিয়ারবাতাস বের হয়ে। আর এই বাতাস বের হয়ে গেলে আরো তাজা বাতাস আমাদের আমাদের ফুসফুসে প্রবেশ করে এবং ফুসফুস আরো সতেজ হয়। আমরা যখন চিন্তা করি যেহেতু অভিকর্ষ বল কমে যায়,তলপেটের অঙ্গ-প্রতঙ্গের রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পায়। তল পেটের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ধমনীর ভিতর রক্ত চলাচল বেড়ে যায়।এছাড়াও সেজদার মাধ্যমে জরায়ুর স্থানচ্যুতি রক্ষা করা যায়, যখন আমরা সেজদা করি তখন আমাদের শরীরের বর থাকে হাটুর উপরে। এছাড়াও আমাদের পায়ের সলিয়াস গ্যাস্ট্রোলুমিয়াজ মাসল,এই মাশুল কে বলা হয় পেরথ্রমাল হার্ড কারণ এই মাশুল গুলোতে অনেক ধমনী আছে,আর এই ধমনী দিয়ে শরীরের নিচের অংশে রক্ত প্রবাহিত হয়ে থাকে।এতে করে শরীরের নিচের অংশ বিশ্রাম পায়। আমরা যখন সিজদায় যাই তখন আমাদের হাট মাটি স্পর্শ করে,হাত এবং কপাল মাটি স্পর্শ করে, এই পদ্ধতির মাধ্যমে কারভাইকাল বিভিন্ন অসুখের নিরাময় হয়। এই সেজদার মাধ্যমে বিভিন্ন হৃদ রোগের উপকার পাওয়া যায়,যখন আমরা সিজদা থেকে উঠি অর্থাৎ মাথা উত্তোলন করি,এবং হাঁটু গেড়ে বসি তখন শরীরের উপরের অংশে যে রক্ত চলে গিয়েছিল সেটা স্বাভাবিক হয় এবং শরীর রিলাক্স হয়। তখন আমাদের উরু ও পিঠের ধমনীর মাধ্যমে অতিরিক্ত রক্ত প্রবাহিত হয়, পিঠের মাংস পেশী রিলাক্স হয়, সেজদার মাধ্যমে আমরা উপকার পাবো কোষ্ঠকাঠিন্য আর বদহজমের, এতে করে যারা ভুগছেন আলসারে বা পাকস্থলীর অন্য রোগে তারা উপকার পাবেন। যখন আমরা বসা থেকে দাঁড়িয়ে যাই তখন আমাদের শরীরের ভর থাকে পায়ের বলের উপরে, এতে আমাদের উরুর মাসাল, পায়ের মাসাল, পিঠের মাসাল হয়।
যখন আমরা নামায আদায় করি তখন আমরা শারীরিকভাবে উপকৃত হই। তবে মুসলিমরা শারীরিক উপকারিতার জন্য নামাজ আদায় করে না। এটা হল বাড়তি উপকার। আসলে মুসলমানেরা সালাত আদায় করে থাকে আল্লাহকে প্রশংসা করার জন্য। আমরা সালাত আদায় করি মহান আল্লাহতালার নির্দেশনার জন্য। সালাতের এই বাড়তি উপকার আকৃষ্ট করবে একজন অমুসলিমকে এবং একজন এর বিশ্বাস কম তাকে। মুসলমানদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হচ্ছে এর মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা। অন্য কোনো উদ্দেশ্যে নয়।
🌺 সালাত হলো ন্যায়পরায়ণতার প্রোগ্রামিং 🌺
হয়তোবা অনেক লোক বলবে কিছু মুসলমান আছে যারা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে তারা মানুষকে ঠকায় মিথ্যা বলে সুদ খায় এবং তারা সমালোচনা করে তারা ন্যায় পরায়ণ নয় । তাহলে সালাত কিভাবে ন্যায়পরায়ণতার প্রোগ্রামিং। যে প্রত্যেক দিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে কিন্তু সে ন্যায় পরায়ণ নয়। এই প্রশ্নের উত্তর রয়েছে সূরা আল মুমিন এর ১-২ নং আয়াতেঃ
অবশ্যই সফলকাম হয়েছে মুমিনগণ, সালাত আদায় করে নম্রভাবে ও মনোযোগের। যারা সালাত আদায় করে বাইরে থেকে, মনোযোগের সাথে এবং নম্রভাবে আদায় করে না তারা কখনোই সালাত থেকে উপকার পাবে না। কেউ যদি নম্রভাবে এবং মনোযোগ সহকারে সালাত আদায় করতে চায় তাহলে তাকে বুঝতে হবে যে নামাজের সময় সে কি বলতেছে।
No comments
Post a Comment