জানাজার নামাজের নিয়ম
জানাজার নামাজ কিভাবে পড়বো?
জানাজার নামাজ পড়ার পূর্বে জানাজা ও তাহার আনুষাঙ্গিক মাসালা সম্পর্কে ধারণা থাকা দরকার।
কোন ব্যক্তির মৃত্যু যখন নিকটবর্তী হয় অর্থাৎ যখন কোন ব্যক্তি মরণাপন্ন অবস্থায় পতিত হয়, তখন তাহাকে উত্তর দিকে মাথা ও পশ্চিম মুখী করিয়া ডান দিকে কাত করিয়া শোয়ানো সুন্নত। এ অবস্থায় তাঁহার নিকট বসিয়া জুরেজুরে কালিমা পড়িবে। কিন্তু কোনো অবস্থায়ই তাহাকে কালেমা পড়ার জন্য জবরদস্তি করা ঠিক হবে না। কারণ এই মুহূর্তটা ভীষণ কষ্ট দায়ক। আর সেই মুহূর্তে জড়াজড়িতে তাহার মুখ দিয়া কোন খারাপ কথা বাহির হইয়া যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই পাশে বসিয়া জুরেজুরে কালিমার পড়িলে শেষ সোনিয়া তাহা পড়িবে ইনশাআল্লাহ। এমত অবস্থায় মরণাপন্ন ব্যক্তির কাছে বসিয়া সূরা ইয়াসীন পড়লে মৃত্যুর কষ্ট কম হয়। কিন্তু মৃত্যুর পর মায়াতের পাশে গোসলের পূর্বে কোরআন বা তাহার কোন অংশ তেলাওয়াত করিবে না। মৃত্যুর পর মাইয়াতের সমস্ত অঙ্গ ঠিক করিয়া দিতে হয়। অর্থাৎ হাত পা বাঁকা থাকলে সোজা করে দিবে। চক্ষুদ্বয় হাতে বন্ধ করিয়া দেওয়া এবং একখানা কাপড় দ্বারা মুখ এমন ভাবে বন্ধ করবে যে, কাপড় তাহার থুতনির দিয়া বাহির করিয়া কাপড়ের মাথা তার মাথার ওপরে নিয়ে আটকায় দেবে। যাতে মুখ খুলতে না পারে। মৃত ব্যক্তির মুখ বন্ধ করার সময় এই দোয়া পড়তে হয় অতঃপর পায়ের বৃদ্ধাঙ্গুলে মিলাইয়া দিতে হয় এবং একখানা চাদর দিয়া সারা শরীর ঢেকে দিবে এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ও দাফনের কাজ সমাধা করার কথা প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন।
জানাজার নামাজঃ
জানাজার নামাজ ফরজে কেফায়াঃঅর্থাৎ কোন গ্রাম বা সমাজেরকোন ব্যক্তি যদি জানাজার নামাজ আদায় না করে তাহইলে গ্রামের সকলেই গুনাহগার হইবে কিন্তু কিছু সংখ্যক লোক নামাজ আদায় করলেও ফরজ আদায় হইয়া যাইবে। তাহাতে অনুপস্থিত গ্রামবাসী আর গুনাহগার হইবে না। জানাজার নামাজে 2 টি ফরজ কাজ তা হলঃ
২। দাঁড়াইয়া জানাজার নামাজ আদায় করা।
জানাজার নামাজে তিনটি কাজ সুন্নত।
দ্বিতীয় তাকবীরের পর দুরুদ শরীফ পড়া।
তৃতীয় তাকবীরের পর মাইয়াতের জন্য দোয়া করা।
জানাজার নামাজ আদায় করিবার নিয়মঃ মৃত ব্যক্তিকে সামনে রেখে ইমাম পাহাড় সিনা অর্থাৎ বরাবর দাঁড়াইবে এবং সকলেই নিয়ত করবে আমি আল্লাহ পাকের জন্য জানাযার ফরজ এফআইআর নামাজ আদায় করিতেছি এবং এই মাইয়াতের জন্য দোয়া করতেছি। এই বলিয়া আল্লাহু আকবার বলে নামাজের হাত বাঁধতে হবে এরপর ছানা পড়িবেঃ
এর পর পুনরায় আল্লাহু আকবার বলে দুরুদ শরীফ পাঠ করিবেঃ
তারপর পুনরায় তৃতীয়বার তাকবীর বলিয়া অর্থাৎ আল্লাহু আকবার বলে এই দোয়া পড়িবেঃ
উল্লেখিত দোয়াটি প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ ও মহিলা উভয়ের জন্য। এরপর চতুর্থ তাকবীর বলে আসসালামুয়ালাইকুম ভুলিয়া নামাজ শেষ করবে। যদি মৃত ব্যক্তি নাবালক ছেলে হয়, তাহা হইলে এই দোয়াটি পড়িবে। তৃতীয়ত পরের দোয়া স্থলে এই দোয়া।
আর যদি মৃত ব্যক্তি নাবালিকা মেয়ে হয় তখন এই দোয়া পড়িবেঃ
লক্ষনীয় বিষয় জানাজার নামাজে প্রথম তাকবীর ব্যতীত আর কোন তাকবীরে হাত উঠানো যাবে না। মৃত ব্যক্তির দাফনঃ জানাযার নামায শেষ করার পর মৃত ব্যক্তিকে তাড়াতাড়ি দাফনের ব্যবস্থা করতে হয়। দাফন করা ফরজে কেফায়া। দাফনের নিয়মঃ কবরের পশ্চিমে খাট রাখিবে কবরের ভেতর প্রয়োজনমতো তিন থেকে চারজন নামিয়া পশ্চিম মুখী হইয়া মাইয়াতকে হাতে করিয়া কবরে রাখিবে এবং কবরে নামানোর সময় মৃত ব্যক্তি পশ্চিম মুখী করিয়া ডানপাশে সয়ন কড়াইতে হয়। সুন্নতে মুয়াক্কাদা। মৃত ব্যক্তিকে যারা রাখিবে তারা রাখিবার সময় নির্ণয়ের দোয়া পড়বেনঃযে পরিমাণ মাটিতে রান হয়েছে, সেই পরিমান মাটির কবরে দেবে অতিরিক্ত মাটি না দেওয়াই উত্তম কবরকে অর্ধ হাতের বা এক বিঘত এর বেশি উঁচু না করাই উত্তম। কবরের ওপর পর্দা মশারি টানানো বাতি জালানো জায়েজ নেই। আবশ্যক হইলে হেফাজত ও মিশনের জন্য পাথর খণ্ড ইত্যাদি কিছু লেখা ও চারদিকে বেষ্টনী দেওয়া জায়েজ আছে।
No comments
Post a Comment