Header Ads

Header ADS

ইসলাম ও অন্যান্য ধর্মে পর্দার বিধান।

পুরুষের পর্দার বিধান।সূরা নূরের আলোকে পর্দার বিধান

হে নবী ! মুমিন পুরুষদের বলে দাও তারা যেন নিজেদের দৃষ্টি সংযত করে রাখে এবং নিজেদের লজ্জাস্থান সমূহের  হেফাজত করে। এটি তাদের জন্য বেশি পবিত্র পদ্ধতি। যা কিছু তারা করে আল্লাহ তা জানেন।

নারীদের পর্দার বিধান।ইসলামে নারীর পর্দার বিধান

আর হে নবী! মুমিন মহিলাদেরকে বলে দাও তারা যেন তাদের দৃষ্টি সংযত করে রাখে এবং তাদের লজ্জা স্থানগুলোর হেফাজত করে আর তাদের সাজসজ্জা না দেখায়, যা নিজে প্রকাশ হয়ে যায় তাছাড়া। আর তারা যেন তাদের ওড়নার আঁচল দিয়ে তাদের বুক ঢেকে রাখে। তারা যেন তাদের সাজসজ্জা প্রকাশ না করে, তবে নিম্ন্মুক্তদের সামনে ছাড়া,  স্বামী, বাপ,  স্বামীর বাপ, নিজের ছেলে,  স্বামীর ছেলে,  ভাই,  ভাইয়ের ছেলে,  বোনের ছেলে,  নিজের মেলামেশায় মেয়েদের,  নিজের মালিকানাধীনদের,  অধীনস্থ পুরুষদের যাদের অন্য কোনো রকম উদ্দেশ্য নেই,  এবং এমন শিশুদের সামনে ছাড়া যারা মেয়েদের গোপন বিষয়ে সম্পর্কে এখনো অজ্ঞ।  তারা যেন নিজেদের সৌন্দর্য লুকিয়ে রেখেছে তা লোকদের সামনে সামনে প্রকাশ করে দেবার উদ্দেশ্যে সজোরে পদক্ষেপ না করে।  তোমরা সবাই মিলে আল্লাহর কাছে তাওবা করো,  আশা করা যায় তোমরা সফলকাম হবে।  সূরা নূর আয়াত -৩০-৩১। হে নবী !তোমার স্ত্রীদের,কন্যাদের ও মুমিনদের নারীদেরকে বলে দাও তারা যেন তাদের চাদরের প্রান্ত তাদের ওপর টেনে নেয়।  এটি অধিকতর উপযোগী পদ্ধতি, যাতে তাদেরকে চিনে নেওয়া যায় এবং কষ্ট না দেওয়া হয়।  আল্লাহ ক্ষমাশীল ও করুণাময়।  সূরা আহজাব-৫৯ 

ইসলাম পর্দার বিধান।

কিছু মানুষ এই ধারণা পোষণ করে যে পর্দা শুধু নারীর জন্য ৷ কিন্তু আসলে তা নয় ৷ পর্দা পুরুষ ও নারী উভয়ের জন্যই ৷ সাহাবীদের যুগেও এই নিয়ম অনুসরণ করে পর্দা পালন করা হতো৷

হযরত উম্মে সালমা (রাঃ) বলেন, আমি আল্লাহর রাসূল (সাঃ) এর কাছে ছিলাম ৷ তার কাছে হযরত মায়মুনাত্ত (রাঃ) ছিলেন৷ অতঃপর (অন্ধ সাহাবী) আব্দুল্লাহ ইবনে উম্মে মাকতুম (রাঃ) উপস্থিত হলেন ৷  উক্ত ঘটনাটি ছিল পর্দার আয়াত নাজিল হওয়ার পর ৷ তখন রাসূলুল্লাহ (সাঃ)বলেন ,তোমরা তার থেকে পর্দা করো ৷ আমরা তখন বললাম ,সে তো অন্ধ ৷ আমাদেরকে দেখেন না এবং চিনেনও না ৷ তিনি বললেন যে, তোমরা কি অন্ধ? তোমরা তাকে কি দেখছ না? 

পর্দা পালন করলে যেমন শান্তি ,সম্মান ও আল্লাহ সুবহানাতায়ালার নৈকট্য অর্জন করা যায়৷ এবং তা অমান্য করলে অসংখ্য-অপূরণীয় ক্ষতি হয় ৷ দেখা দেয় ধর্মীয় ,আত্মিক পারিবারিক ও সামাজিক অবক্ষয়৷ সমাজ ব্যবস্থার ধ্বংস ও বিপর্যয় হয়ে পড়ে ৷ বেপর্দা ও বেহায়াপনা শুধু নিজের মধ্যে সীমিত থাকে এমনটি নয় ৷ বরং এর দ্বারা অনৈতিকতা, অশ্লীলতা, জিনা ব্যাভিচার ,ধর্ষণ, পরকীয়া ইত্যাদি সমাজে বিস্তার লাভ করে ৷ সম্পূর্ণ সমাজের প্রার্থীর ধ্বংসাত্মক পরিণতি এবং আখেরাতে আজাভোগ করে৷

রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেন চক্ষুদ্বয় ,জিহ্বা,উভয় হাত ও উভয় পা জেনা করে এবং লজ্জাস্থান তা চুরান্তে পৌঁছায় তা প্রত্যাখ্যান করো৷ মুসাদেআহমদ 8/343।  তিনি আরো বলেন নারী আবৃত থাকা নিরাপদ কারণ যখন সে বেপর্দায় বের হয় তখন শয়তান তার দিকে উকি মেরে তাকায় তিরমিজি-(1/221)

নারীরা সাধারণত অভিভাবকের তত্ত্বাবধানে জীবন যাপন করে থাকে।  অর্থাৎ বিয়ের আগে পিতা ভাইয়ের আর বিয়ের পর তারা স্বামীর তত্ত্বাবধানে থাকে। এজন্য নারীদেরকে যেমন বেপর্দায় চলার কারণে শাস্তি দেওয়া হবে, অভিভাবক তাকে সতর্ক না করলে আল্লাহ পাকের দরবারে তাদের অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে। হাদিসের কথা অনুযায়ী পর্দাহীনতা সমাজে অশ্লীলতা,  চারিত্রিক অবক্ষয় ও পশুত্বের সয়লাভ ঘটায়। নারীদের পর্দাহীনতা চলাফেরা ও তাদের দেহ প্রদর্শন পুরুষদেরকে অবৈধ ও অশ্লীল কাজের প্রতি উত্তেজিত ও উজ্জীবিত করে তোলে।  ফলে সমাজের সর্বস্তরে জিনা ব্যভিচার,  ধর্ষণ,  অপহরণ,  নির্যাতন,  দিন দিন বৃদ্ধি পেতে থাকে।  আল্লাহ সুবহানাতায়ালা বলেন- তোমরা নিজ গৃহে অবস্থান করো এবং ( পর পুরুষের সামনে)  প্রাচীন জেহেলি যুগের মত সাজ সজ্জা প্রদর্শন করে বেড়াবে না।  সূরা আহযাব-৩৩।  পর্দাহীনতা পারিবারিক সম্প্রীতির বদন ছিন্ন করে এবং পরিবারের সদস্যদের মধ্যে পারস্পারিক অবিশ্বাস সৃষ্টি করে। এই পর্দাহীনতায় এক পর্যায়ে তালাকের অন্যতম কারণ হয়ে ওঠে। এভাবেই পর্দাহীনতা বহুবিধ সামাজিক বিপর্যয় ডেকে আনে যা থেকে শুধুমাত্র পর্দার বিধান সর্বস্তরে পালনের মাধ্যমেই উন্নতি লাভ করা সম্ভব। প্রকৃতপক্ষে পর্দায় মানুষের মন মস্তিষ্ক পরিবার সবার ও পরিবেশকে সুন্দর মার্জিত ও সুখময় করে তুলতে পারে এবং পরকালীন জীবন সুন্দর এবং পরিপক্ক করে তুলতে পারে।  এ থেকে আমরা বুঝতে পারি যে পর্দার গুরুত্ব অপরিসীম এজন্যই আল্লাহ সুবাহানাতালা পর্দাকে আবাদের জন্য ফরজ করে দিয়েছেন যাতে করে সফলকাম হতে পারে।

পবিত্র কুরআন ও হাদিসের আলোকে পর্দার ছয়টি নিয়ম রয়েছে।

১। প্রথম নিয়মটি হচ্ছে পর্দার শিমা এটিই হচ্ছে নারী এবং পুরুষের পর্দার মধ্যে পার্থক্য। পুরুষদের জন্য ডাকতে হবে নাভি থেকে হাঁটু পর্যন্ত। আর নারীদের ডাকতে হবে পুরো শরীর। তবে তাদের খোলা থাকতে পারে তাদের মুখমন্ডল এবং হাতের কব্জি পর্যন্ত । যদি সেটুকুও রাখতে চায় তাহলে ডাকতে পারে। তবে সেটা আবশ্যিক না সে ইচ্ছা করলে ডাকতেও পারে নাও ডাকতে পারে। অর্থাৎ এখানে এসে খোলা রাখতে পারবে তার মুখমন্ডল এবং হাতের কব্জি।.
২। একজন নারী পুরুষ যে পোশাকটা পরবে, সে পোশাকটা হবে ডিলেঢালা  এমন পোশাক হবে না যে পোশাকটা আটুসাটু এবং তার শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বুঝা যায়।
৩। পোশাকটা এমন শস্য হবে না যে তার শরীরের অঙ্গ দেখা যায়।
৪। নারী এবং পুরুষ এমন পোশাক পরবে না যেটা জাঁকজমক যে পোশাক দাড়ি এবং পুরুষকে আকৃষ্ট করে।
৫। আপনি এমনই পোশাক করবেন না যেটা বিপরীত লিঙ্গের মানুষ পড়ে থাকে। যেমন পুরুষরা কানের দুল পড়ে।
৬। এবং এমন কোন পোশাক পরা যাবে না যেটা অবিশ্বাসীদের চিহ্ন থাকে।

হিন্দু ধর্মে পর্দার বিধান।  

ঋদবেদে আছে, হে নারী তুমি দৃষ্টি নিচে রাখো, উড়দে দৃষ্টি করোনা।  আপন পদযুগল একত্রে মিলাইয়া রাখো। তোমার নাগ যেন কেউ দেখতে না পায়। যদি এমনই লজ্জাবতী হতে পারো,  তাহলে নারী হয়েও তুমি সম্মানের পাত্রী হতে পারবে। মহিলারা পুরুষদের মত পোশাক পরিধান করবে না এবং পুরুষরাও তাদের স্ত্রীদের পোশাক পরিধান করবে না।  ঋদবেদ গ্রন্থ নম্বর ১০, অনুচ্ছেদ ৮৫, পরিচ্ছে ৩০। পর্দার আরেকটি বিধান পাওয়া যায় হিন্দু ধর্মের সংস্কৃত ধর্মগ্রন্থ মুন সংহীতায়- কি বালিকা কি যুবতি কি বিদ্যা কোন স্ত্রীকেই নিজগৃহেও স্বাধীনভাবে কোন কার্য করা উচিত না । স্ত্রী ধর্ম ১৪৭। স্ত্রীলোক শৈশবে পিতার বসে যৌবনে স্বামীর বসে এবং স্বামী দেখান তো হইলে পুত্র দিগর বসে থাকিবে।  স্ত্রী ধর্ম-১৪৭। স্ত্রীলোকগড় পিতা স্বামী পুত্রগণ হইতে বিচ্ছিন্ন থাকিতে ইচ্ছা করিবে না। যেহেতু স্ত্রী লোকেরা ইহাদের নিকট হইতে পৃথক থাকিলে অকার্য অনুষ্ঠান দ্বারা পিত্তকূল ও শশুর কূল কলঙ্কিত হইতে পারে। স্ত্রীধর্ম-১৪৯। ঋকবেদের ১০ নম্বর গ্রন্থে ৮৫ নাম্বার অনুচ্ছেদের ৩০ নাম্বার পরিচ্ছেদে নারীরা পুরুষদের মত পোশাক পর্বে না এবং পুরুষরাও তাদের স্ত্রীদের মতো পোশাক পরবে না।
খ্রিস্ট ধর্মে পর্দার বিধান।
বাইবেলের ২২ নম্বর অনুচ্ছেদের ৫ নম্বর অধ্যায় বলা হয়েছে পুরুষরা এমন কোন পোশাক পরবে না যেটা দেখতে মহিলাদের মত। যারা এমনটা করবে তারা প্রভুর ঘৃণার পাত্র হবে। দুই নাম্বার অনুচ্ছেদ ৯ নম্বর অধ্যায় আছেঃ মহিলারা পোশাক পড়বে শালীনতার সাথে, সম্ভবের সাথে, কোনরকম অলংকৃত চুল পড়বে নামুক্তা এবং কোনরকম দামি পোশাক পরবে না। একজন খ্রিস্টান মহিলারও শরীর ঢেকে রাখা উচিত। খ্রিস্টান সন্ন্যাসীরাও মুসলমানদের মত পোশাক পড়ে থাকে। তাদেরকেও মুসলিম মহিলাদের মত দেখায়।

No comments

Powered by Blogger.