Header Ads

Header ADS

দোয়া কুনুত । দোয়া কুনুত বাংলা উচ্চারণ সহ

দোয়া কুনুত অর্থ কি?

দোয়া কুনুত এর আভিধানিক অর্থ হলো আনুগত্য করা। আর দোয়া শব্দটি প্রার্থনার জন্য ব্যবহৃত হয়। সুতরাং দোয়ায়ে কুনুত অর্থ হলো আনুগত্য, নম্রতা, ভক্তি ও শ্রদ্ধার সহিত প্রার্থনা করা।

কনুত শব্দটি অনেক অর্থ সমৃদ্ধ একটি শব্দ এই শব্দের মাধ্যমে নীরবতা, সালাত, কিয়াম ও এবাদত ইত্যাদি বোঝায়। নামাজে কুনুত দ্বারা উদ্দেশ্য হলোনামাজে দাঁড়ানো অবস্থায় আল্লাহর কাছে দোয়া করা” এছাড়াও মানুষ যখন অতি বিপদ ও মুসিবতে পড়ে তখনো এই দোয়া পড়ে থাকে।

দোয়া কুনুত কখন পড়তে হয়?

রাতের নামাজ হলো বিতের। আর এই নামাজেই দোয়ায়ে কুনুত পড়তে হয়। এশার নামাজের পর থেকে ফজরের নামাজের ওয়াক্ত আসার পূর্ব পর্যন্ত এই নামাজ পড়ার সময় বিদ্যমান। এই নামাজের তৃতীয় রাকাতে সূরা মিলানোর পর আল্লাহু আকবার বলে, তাকবির বলার পর দোয়া কুনুত পড়তে হয়। এই দোয়ায় মানুষ কি বলে, কেনই বা এই দোয়া পড়তে হয়, এই দোয়ায় কি রয়েছে? দোয়া কুনুত না পড়লে নামাজ হবে কি?

দোয়া কুনুত বা দোয়ায়ে কুনুতঃ

আরবিতে দোয়া কুনুতঃ اَللَّهُمَّ اِنَّ نَسْتَعِيْنُكَ-  وَنَسْتَغْفِرُكَ وَنُؤْمِنُ بِكَ-  وَنَتَوَكَّلُ عَلَيْكَ وَنُثْنِىْ عَلَيْكَ الْخَيْرَ-  وَنَشْكُرُكَ وَلاَ نَكْفُرُكَ وَنَخْلَعُ وَنَتْرُكُ مَنْ يَّفْجُرُكَ-اَللَّهُمَّ اِيَّاكَ نَعْبُدُ وَلَكَ نُصَلِّىْ وَنَسْجُدُ وَاِلَيْكَ نَسْعَى-  وَنَحْفِدُ وَنَرْجُوْ رَحْمَتَكَ وَنَخْشَى عَذَابَكَ-  اِنَّ عَذَابَكَ بِالْكُفَّارِ مُلْحِقٌ

দোয়া কুনুত বাংলা উচ্চারণ সহ অর্থ

আল্লাহুম্মা ইন্না নাস্তাইনুকা ওয়া নাস্তাগফিরুকা ওয়া নু-মিনু বিকা ওয়ানাতা ওয়াক্কালু আলাইকা ওয়া নুষনি আলাইকাল খাইর, ওয়া নাসকুরুকা ওয়ালা নাগফুরুকা ওয়া নাখলাও ওয়ানাতরুকু মাইয়াফজুরুকা, আল্লাহুম্মা ইয়া কানাবুদু , ওয়ালাকা নুসাল্লি ওয়ানাশযুদু ওয়া ইলাইকা নাসআ ওয়া নাহফিদু ওয়ানারজু রাহমাতাকা ওয়া নাকশা আজাবাকা ইন্না আজাবাকা বিলকুফ-ফারে মূলহিক্ক।

দোয়া কুনুত বাংলা

হে আল্লাহ! আমরা তোমার নিকট সাহায্য ভিক্ষা করিতেছি এবং তোমার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করিতেছি এবং তোমার ওপর ঈমান আনিতেছি এবং তোমার ওপর ভরসা করিতেছি। তোমার উত্তম প্রশংসা করিতেছি এবং চিরকাল তোমার শুকর গুজারি করিব, কখনও তোমার না শুকরী বা কুফরি করিব না।  তোমার নাফরমানী যাহারা করে ( তাহাদের সহিত আমরা কোন সম্পর্কও রাখিব না)  তাহাদের আমরা ত্যাগ করিয়া চলিব।  হে আল্লাহ!  আমরা একমাত্র তোমারই এবাদত করিব, ( অন্য কাহারও  এবাদত করিব না)  একমাত্র তোমার জন্য নামাজ পড়িব,  একমাত্র তোমাকেই সেজদা করিব, (তুমি ব্যতীত আর কারো জন্য নামাজ পড়িবো না বা অন্য কাউকেও সেজদা করিব না)  এবং একমাত্র তোমার আদেশ পালন ও তাবেদারির জন্য সর্বদা ( দৃঢ় মনে) প্রস্তুত আছি।  সর্বদা তোমার রহমতের আশা এবং তোমার আযাবের ভয় অন্তরে রাখি।  যদিও তোমার আসল আজাব নাফরমানদের অপর হইবে।  তথাপি আমরা সেই আযাবের ভয়ে কম্পমান থাকি।

আরো জানুন > কেন সালাতুত তাসবিহ জীবনে একবার হলেও পড়তে হয়

দোয়া কুনুত কি কুরআনের কোন সুরার অংশ?

দোয়া কুনুত পবিত্র কুরআনের কোন সূরার অংশ নয়,  কুরআনের কোথাও এর উল্লেখ নেই। এটি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সুন্নাহ।

বিতর নামাজে দোয়া কুনুত না পারলে

বিতর নামাজে দোয়ায়ে কুনুত পড়া সুন্নত বা মুস্তাহাব। ইমাম আবু হানিফ রহমতুল্লাহি আলাই এর অনুসারীগণ এটিকে ওয়াজিব বলেছেন। দোয়ায়ে কুনুত বিতের নামাজে পড়া খুবই উত্তম। কেহ যদি তা না পারেন তাহলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তা শিখে নেওয়া উচিৎ।

ইমাম নববী রহমাতুল্লাহ বলেন,  অগ্রগণ্য মাযহাব এর মতে, কুনুতের জন্য নির্দিষ্ট কোন দোয়া নেই তাই এর পরিবর্তে দোয়া সম্বলিত এক বা একাধিক কোরআনের আয়াত বা অন্য যেকোনো দোয়া করা যায়।  কিন্তু যে দোয়া হাদিসে বলা হয়েছে সেটা পড়াই উত্তম।  আর তা হল দোয়ায়ে কুনুত।যদি কেউ দোয়া কুনুত না জানেন তাহলে এই أَللّهُمَّ اغْفِرْ لَنَا অর্থ হে আল্লাহ, আমাকে ক্ষমা করুন. দোয়াটি তিনবার পাঠ করবেন। দোয়া কুনুত শিখার আগ পর্যন্ত আপনি এই দোয়াটি বিতের সালাতে পড়তে পারেন।

সূরা ইখলাস দোয়া কুনুত এর পরিবর্তে পড়া যাবে কি?

কুনুতের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে দোয়া করা। বিতর নামাজে দোয়া কুনুত এর পরিবর্তে ৩ বার সূরা ইখলাস পড়া যাবে না।  তার কারণ সূরা ইখলাস কোন দোয়া সম্বলিত সূরা নয়। ফাতাওয়া আল রিদাই খন্ড-০৭  পৃষ্ঠা- ৪৮৫।

দোয়া কুনুত এর গুরুত্ব ও ফজিলত

মুসলমানদের কোন সমস্যা বা দুর্যোগ বা বিপর্যয় আসতো সাথে সাথে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দোয়া কুনুত পাঠ করতেন।  সে বিতর নামাজে, ফজরের সময় এবং কখনো কখনো সারা বছর অন্যন্য নামাজের সময়ও এটি পাঠ করতেন।

আরো জানুন > ইসলাম ও অন্যান্য ধর্মে পর্দার বিধান

আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু বলেন। আমি একরাত্রে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে ছিলাম।  তিনি শয্যা ত্যাগ করলেন এবং দুই রাকাত নামাজ পড়লেন।  এরপর উঠে বিতর পড়লেন।  প্রথম রাকাতে ফাতেহার পর সূরা আলা পাঠ করলেন। এরপর রুকু ও সেজদা করলেন।  দ্বিতীয় রাকাতে ফাতেহা ও কাফিরুন পাঠ করলেন।  এবং রুকুর সিজদা করলেন।  তৃতীয় রাকাতে ফাতেহা ও ইখলাস পাঠ করলেন এরপর রুকুর আগে কুনুত পাঠ করলেন।

No comments

Powered by Blogger.