Header Ads

Header ADS

নামাজ ভুল হলে করনীয়। ভুলের নামাজ।

নামাজে সাজদায়ে সাহু কখন দিবেন

আপনার নামায/সালাতের ভিতর যদি কোন ওয়াজীব তরক হয়ে যায় তাইলে আপনাকে অবশ্যই সাহু সিজদা দিতে হবে। যদি না দেন তাইলে আপনার নামায হবে না। সাহু সিজদা দেয়ার নিয়ম হল শেষ রাকাতে আত্তাহিয়্যাতু পড়ে শুধু ডান দিকে সালাম ফিরিয়ে ২ টি সিজদা দিতে হবে। ২ সিজদার মাঝখানে অবশ্যই ১ তাসবীহ পরিমান সোজা হয়ে বসতে হবে। তারপর যথারীতি আবার আত্তাহিয়্যাতু, দুরুদ শরীফ ও দোয়া মাসুরা পড়ে নামায শেষ করতে হবে। তবে নামাজের মধ্যে যদি কোন ফরয তরক হয় তাহলে সাহু সিজদা দিলেও কোন লাভ হবে না। নামাজ আবার পুনরায় পড়তে হবে। অনেককেই দেখা যায় কোন কারন ছাড়াই সব নামাযের শেষে একটা সাহু সিজদা দিয়ে দেয়। এটা ঠিক নয়। আমি এখানে সহজ ভাবে নামাযে কখন সাহু সিজদা দিতে হবে আর কখন দিতে হবে না এই মাসলা- মাসায়েল গুলি নিয়ে আলোচনা করবো। সাহু সিজদার এই মাসলা গুলি ছেলে মেয়ে উভয়ের নামাযের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। তবে আপনি যদি জামাতে নামায পড়েন তাইলে ইমাম সাহেব যদি সাহু সিজদা দেয় তাইলে আপনি দিবেন। আর যদি আপনি জামাতে মাসবুক মানে ১ রাকাত পরে উপস্থিত হন আর যদি আপনার নিজে পড়ার রাকাতে কোন ওয়াজীব তরক হয়ে যায় তাইলে আপনি সাহু সিজদা দিবেন।


কোন ভুলের কারণে সেজদায়ে সাহু দেওয়ার নিয়ম।  

১। ফরজ নামাযে প্রথম ২ রাকাতে সুরা ফাতেহা পড়া ওয়াজীব। যদি কোন কারনে ফরজ নামাযে প্রথম রাকাত বা ২য় রাকাত বা উভয় রাকাতেই সুরা ফাতেহা ভুল বশত না পড়া হয় তাহলে আপনাকে সাহু সিজদা দিতে হবে। আবার ফরজ নামাযের তৃতীয় ও চতুর্থ রাকাতে সুরা ফাতেহা পড়া সুন্নত। আপনি যদি যে কোন ফরজ নামাযের তৃতীয় ও চতুর্থ রাকাতে সুরা ফাতেহা ভুল বশত না পড়তে পারেন তাহলে আপনাকে ভুলের সেজদা বা সাহু সিজদা দিতে হবে না।

আরো জানুন > ঈদুল ফিতরের নামাজের নিয়ম

২। ফরজ নামাযে প্রথম দ্বিতীয় রাকাতে সুরা ফাতেহা পড়ার পর অন্য একটি সুরা মিলানো বা পড়া ওয়াজীব। যদি আপনি ভুল বশত ফরজ নামাযের প্রথম দ্বিতীয় রাকাতে সুরা ফাতেহা পড়ার পর অন্য কোন সূরা না মিলানো হয় তাইলে আপনাকে সিজদায়ে সাহু দিতে হবে। আবার ফরজ নামাযের তৃতীয় ও চতুর্থ রাকাতে সুরা ফাতেহা পড়ার পর অন্য কোন সুরা পড়ার নিয়ম নেই। তবে আপনি ভুল বশত ফরজ নামাযের তৃতীয় ও চতুর্থ রাকাতে সুরা ফাতেহা পড়ার পর, অন্য কোন সুরা পড়েলে সাহু সিজদা বা ভুলের সিজদা দিতে হবে না।

৩। সুন্নত ও নফল সকল নামাযের প্রত্যেক রাকাতেই সুরা ফাতেহা পড়া ও সুরা ফাতেহা পড়ার পর অন্য একটি সুরা মিলানো ওয়াজীব। আপনি যদি যে কোন সুন্নত ও নফল নামাযের যে কোন রাকাতে সুরা ফাতেহা বা সুরা ফাতেহার পর অন্য একটি সুরা না পড়েন তাইলে আপনি একটি ওয়াজীব তরক করলেন। আপনাকে অবশ্যই সিজদায়ে সাহু দিতে হবে।

৪। ভুলবশত যে কোন রাকাতে দ্বিতীয় রুকু বা তিনটা সিজদা দিলে সিজদায়ে সাহু দিতেই হবে।

৫। সুরা ফাতেহা পড়ার পর এখন কোন সুরা পড়বো এই চিন্তায় যদি ৩ তসবীহ পরিমান সময় অতিবাহিত হয় তাইলে সিজদায়ে সাহু দিতে হবে। অথবা কোন সুরার কোন আয়াত ভুলে গেছেন কিন্তু ঐ আয়াত স্মরন করার জন্য যদি ৩ তসবীহ পরিমান সময় চলে যায় তাইলে সিজদায়ে সাহু দিতে হবে। ফরয ও সুন্নত নামাযের ১ম বৈঠকে যদি ভুলে ২ বার আত্তাহিয়্যাতু পড়েলে সিজদায়ে সাহু দিতে হবে। আবার ফরয ও সুন্নত উভয় নামাযের ১ম বৈঠকে আত্তাহিয়্যাতু পড়া হয়েছে এর পর যদি দুরুদ শরীফের আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদ পর্যন্ত পড়া হয়ে যায় তাইলে শেষ বৈঠকে সিজদায়ে সাহু দিতে হবে। তবে এরচেয়ে কম পরলে সিজদায়ে সাহু দিতে হবে না। তবে নফল নামাযের যে কোন বৈঠকে দ্বিতীয় বার আত্তাহিয়্যাতু পড়ে ফেললে সিজদায়ে সাহু দিতে হবে না। 

৬। যেকোন বৈঠকে আত্তাহিয়্যাতু পড়ার সময় যদি ভুলবশত সুরা ফাতেহা পড়েন তাইলে সিজদায়ে সাহু দিতে হবে। তবে নিয়ত বাধার পর ছানার বদলে ভুলে দোয়া কুনুত পড়ে ফেললে সিজদায়ে সাহু দিতে হবে না।

৭। তিন ও চার রাকাত বিশিষ্ট নামাযে প্রথম বৈঠক ভুলে গেছেন এবং ৩য় রাকাতের জন্য দাঁড়িয়ে গেছেন, যদি অর্ধেকের কম দাঁড়িয়ে থাকেন তাইলে বসে পড়বেন এবং আত্তাহিয়্যাতু পড়ে ৩য় রাকাতের জন্য দাড়াবেন। এই অবস্থায় সিজদায়ে সাহু দিতে হবে না। আর যদি অর্ধেকের বেশি দাঁড়িয়ে যান তাইলে আর বসা যাবেনা। তিন ও চার রাকাত নামায শেষ করে শেষ বৈঠকে সিজদায়ে সাহু দিতে হবে।

৮। যোহর ও এশার ৪র্থ রাকাতে বসতে মনে নাই। একদম সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে ৫ম রাকাতের জন্য দাঁড়িয়ে যদি দাঁড়িয়ে যান। তাহলে মনে হবার সাথে সাথে বসে পড়বেন। আত্তাহিয়্যাতু ও দুরুদ শরীফ পড়ে সালাম ফিরাবেন। এক্ষেত্রে সিজদায়ে সাহু দিতে হবে না। আর যদি ৫ম রাকাতে সুরা ফাতেহা পড়ে ফেলেন এবং রুকুও করে ফেলেন তাইলেও বসে পড়বেন। এই অবস্থায় সিজদায়ে সাহু দিতে হবে। আর যদি রুকু করার পরও মনে না হয় তাইলে আরো দ্বিতীয় রাকাত পড়ে মোট ৬ রাকাত পড়বেন। এক্ষেত্রে শেষ ২ রাকাত নফল ও প্রথম ৪ রাকাত ফরয হিসাবে আদায় হবে। কিন্তু আসরের নামাযে ৪র্থ রাকাতে এই রকম ভুল হলে মোট ৬ রাকাতই পড়তে হবে কিন্তু ৬ রাকাত পুরাটাই নফল নামাজ হবে। কারন আসের নামাযের পর কোন নফল নামায নেই। এক্ষেত্রে আপনাকে পুনরায় আসরের নামায পড়তে হবে।

৯। নামায ৩ রাকাত পড়া হলো না ৪ রাকাত পড়া হলো এই রকম সন্দেহ যদি সব সময় হয়ে থাকে তাইলে এই সন্দেহের কোন ভিত্তি নাই। আর যদি হঠাৎ করে এই সন্দেহ হয় তাইলে এই রাকাত কে ৩য় রাকাত ধরে আরেক রাকাত পড়ে নিবেন। আর মন যদি ৪র্থ রাকাতের দিকে সায় দেয় তাইলে আরেক রাকাত পড়ার দরকার নেই। এই অবস্থায় সিজদায়ে সাহু দিতে হবে না।আবার ১ম রাকাত পড়লেন, না ২য় রাকাত পড়লেন। এই ধরনের সন্দেহ যদি সর্ব সময় হয়ে থাকে তাইলে এই সন্দেহের কোন ভিত্তি নেই। আর যদি হঠাৎ করে এই সন্দেহ হয় তাহলে এই রাকাত কে ১ম রাকাত ধরে আত্তাহিয়্যাতু পড়বেন। কারন এটা ২য় রাকাতও হতে পারে। আবার ২য় রাকাতেও আত্তাহিয়্যাতু পড়বেন।কারন এটা ২য় রাকাত হতে পারে। আবার ৩য় রাকাতেও আত্তাহিয়্যাতু পড়বেন। কারন এটা ৪র্থ রাকাত হতে পারে। তাই তারপর ৪র্থ রাকাতে সিজদায়ে সাহু দিয়ে তারপরতার পর সালাম এর মাধ্যমে নামাজ শেষ করবেন।

১০। নামায শেষ হওয়ার পর সালাম ফিরানোর পর যদি নামায তৃতীয় রাকাত পড়েছেন না চতুর্থ রাকাত পড়েছেন এই রকম সন্দেহ যদি সব সময় হয়ে থাকে তাইলে এই সন্দেহের কোন ভিত্তি নাই। আর যদি স্পষ্ট ভাবে মনে পড়ে যে নামায তৃতীয় রাকাত পড়েছেন এবং আপনি কিবলামুখি হয়ে বসে আছেন এবং কারো সাথে কথা বলেন নি তাইলে সাথে সাথে দাঁড়িয়ে যেয়ে আরেক রাকাত পড়ে সিজদায়ে সাহু করে সালাম ফিরালে নামাজ হয়ে যাবে। তবে কারো সাথে কথা বলে ফেললে নামায পুনরায় নতুন করে পড়তে হবে।

১১. বিতর নামাযে দোয়া কুনুত না পড়েই রুকুতে চলে গেছেন বা দোয়া কুনুতের জায়গায় অন্য কিছু পড়ে ফেলেছেন তাইলে সিজদায়ে সাহু দিতে হবে। আর যদি দোয়া কুনুতের জায়গায় অন্য কিছু পড়েছেন কিন্তু মনে হবার সাথে সাথে দোয়া কুনুত পরলে সাহু সিজদা দিতে হবে না।

No comments

Powered by Blogger.