ফরজ গোসলের নিয়ম
ফরজ গোসলের নিয়ম দোয়া এবং নিয়ত
ইসলামের মেজরিটি হুকুম আহকাম পবিত্রতার অপর নির্ভরশীল, যে কোন এবাদতের পূর্ব শর্ত হচ্ছে পবিত্রতা অর্জন করা। এজন্যই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাকে ঈমানের অঙ্গ বলা হয়েছে। পবিত্রতা অর্জন বলতে সকল প্রকার জাহেরী এবং বাতেনী নাপাকি হইতে পবিত্রতা অর্জনের কথা বলা হয়েছে। পবিত্রতা এর ফজিলত এবং উপকারিতা বলে শেষ করা যাবেনা। পাঁচরটি কাজের মাধ্যমে গোসল ফরজ হয় এবং তিনটি কাজের মাধ্যমে ফরজ গোসল সম্পূর্ণ করতে হয়।
গোসল সম্পর্কে আল্লাহর বাণী
হে ঈমানদারগণ! যখন তোমরা নামাজের জন্য তৈরি হও, তখন তোমাদের মুখমন্ডল ও হাত দুটি কনুই পর্যন্ত ধুয়ে ফেলো, মাথার ওপর হাত বোলাও এবং পা দুটি ঘেরু পর্যন্ত ধুয়ে ফেলো। যদি তোমরা জানাবাদ অবস্থায় থাকো, তাহলে গোসল করে পাক সাফ হয়ে যাও। সূরা মায়েদা-০৬।
হে ঈমানদারগণ! তোমরা নেশাগ্রস্ত অবস্থায় নামাজের কাছে যেও না। নামাজ সেই সময় পড়া উচিত যখন তোমরা যা বলছ তা জানতে পারো। অনুরূপভাবে অপবিত্র অবস্থায় গোসল না করা পর্যন্ত নামাজের কাছে যেও না। তবে যদি পথ অতিক্রম কারী হও, তাহলে অবশ্যই স্বতন্ত্র কথা। আর যদি কখনো তোমরা অসুস্থ হয়ে পড়ো সফরে থাকো বা তোমাদের কেউ মলমূত্র ত্যাগ করে আসো অথবা তোমরা নারী সম্ভোগ করে থাকো এবং এরপর পানি না পাও, তাহলেপাক পবিত্র মাটির সাহায্য গ্রহণ করো এবং তা নিজের চেহারা ও হাতের ওপর ভুলাও। নিঃসন্দেহে আল্লাহ কোমলতা অবলম্বনকারী ও ক্ষমাশীল। সূরা আন নিসা-৪৩।
গোসল ফরজ হওয়ার কারণসমূহ
১। যৌন সম্ভব দ্বারা অথবা অন্য কোন কারণে জোশের সাথে মনি বা বীর্য বের হলে।
২। স্বপ্ন দেখুক আর না দেখুক রাতে কিংবা দিনে ঘুমন্ত অবস্থায় যদি বীর্যপাত হয়। কিন্তু শয়নের কাপড়ে বা শরীরে বীর্যের চিহ্ন না দেখা গেলে গোসল ফরজ হয় না।
৩। স্বামী লিঙ্গের শুধু অগ্রভাগ অর্থাৎ খাতনার স্থানটুকু স্ত্রীর গুপ্তাঙ্গে প্রবেশ করলে ( যদিও কিছু বের না হয়)। যেমন সামনের রাস্তায় এই হুকুম টুকু তদ্রূপ মহাপাপ হওয়া সত্ত্বেও যদি কেউ পেছনের রাস্তায় প্রবেশ করায় তবুও এই হুকুম।
৪। স্থির লোকের হায়েজ হওয়ার পর যখন রক্ত বন্ধ হয় তখন গোসল ফরজ হয়।
৫। স্ত্রীর লোকে নেফাসের রক্তচাপ বন্ধ হলে পাক হওয়ার জন্য গোসল করা ফরজ হয়।
ফরজ গোসলের দোয়া
গোসলখানা নোংরা থাকলে এই দোয়াটি গোসলখানায় প্রবেশের পূর্বে পড়বে যদি গোসলখানা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকে তাহলে কাপড় খোলার সময় এই দোয়াটি পড়তে হয়। বিসমিল্লাহিল্লাজি লা ইলাহা ইল্লাহু।
আরো জানুন > টয়লেটে যাওয়া ও বের হওয়ার দোয়া
ফরজ গোসলের নিয়ত
গোসলেরে নিয়ত করা সুন্নত। নিয়ত এভাবে করা যায়, নাওয়াইতুল গোসলা মিনাল জানাবাতি। অর্থাৎ আমি জানাবাদ থেকে পবিত্রতা হাসিল করার জন্য গোসল করছি।
গোসলের পূর্বে করণীয়
২। গোসলের সময় কাবার দিকে মুখ না করে গোসল করা উত্তম।
৩। গোসলের শুরুতে দু হাতের কবজি পর্যন্ত ধৌত করা সুন্নত।
৫। তারপর নামাজের ওযুর নেয় অজু করবে। এই ওজুর মধ্যে ওযুর অঙ্গসমূহের দোয়া পাঠ করাটা বিতর্কিত, তবে গোসলখানা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হলে এবং তার মধ্যে পায়খানা না থাকলে দোয়া গুলো পাঠ করা যায়।
গোসলের ফরজ সমূহ
১। কুলি করা ফরজ। রোজাদার নাহলে গড়গড়া করা সুন্নত এবং তিনবার এরূপ গড়গড়া সহ কুলি করা সুন্নত। দাঁতের মধ্যে খাদ্য কণা আটকে থাকলে তা অপসারণ করবে।
২। নাকের নরম স্থান পর্যন্ত পানি পৌঁছানো ফরজ। নাকের মধ্যে শুকনো ময়লা থাকলে তা ধৌত করবে। তিনবার ধৌত করা সুন্নত।
৩। সমস্ত শরীরে পানি পৌঁছানো ফরজ। মহিলাদের নাকের ও কানের ছিদ্রে অলংকার না থাকলে তার মধ্যে পানি পৌঁছাতে হবে। অলংকার থাকলে নাড়াচাড়া দিয়ে ছিদ্রের ভেতরে পানি প্রবেশ করাবে। চুলের বেনি ও খোপা খুলে সমস্ত চুল ভেজাতে হবে। তবে কোন ঘাম বা আঠালো বস্তু দ্বারা মহিলাদের চুল বেণী বা খোঁপা করে বাঁধানো থাকলে সে ক্ষেত্রে তা না খুলে পানি পৌঁছতে পারলেও চলবে (বেহস্তি দেওয়ার- বাংলা)
No comments
Post a Comment