Header Ads

Header ADS

তায়াম্মুমের নিয়ম।গাড়িতে তায়াম্মুমের নিয়ম

তায়াম্মুম কি? পবিত্রতা অর্জন করার জন্য পানি পাওয়া না গেলে পাক মাটি দ্বারা যে পবিত্রতা অর্জন করা হয় তাকে তায়াম্মুমএমন বলে। পানি না পাওয়ার কারণে যাকে তায়ামুম করতে হবে, পানি পাওয়ার প্রবল ধারণা থাকলে মুস্তাহাব ওয়াক্ত পার হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত অপেক্ষা করা তার জন্য মুস্তাহাব।  আর কেউ পানি দেওয়ার ওয়াদা করলে অবশ্যই তাকে অপেক্ষা করতে হবে,  যদিও ওয়াক্ত শেষ হওয়ার আশঙ্কা হয়।

তায়াম্মুমের নিয়ম

১। তায়াম্মুমের শুরুতে বিসমিল্লাহ বলা সুন্নত।

২। মেসওয়াক করা ওযুর নেয় তায়াম্মুমেও সুন্নত।

৩। নিয়ত করা ফরজ।

তায়াম্মুমের নিয়ত

অর্থ  আমি নাপাকি দূর করার, নামাজ বৈধ করার এবং আল্লাহ তা'আলা নৈকট্য অর্জন করার উদ্দেশ্যে তায়াম্মুম করছি। (নিয়ত হচ্ছে মনের ইরাদা)

৪। নিয়ত করার পর পাক মাটি বা মাটি জাতীয় বস্তু  যার ওপর তেমন করা যায়,  এর উপর উভয় হাতের তালু লাগাবে।

৫। তালু লাগানোর সময় আঙ্গুলগুলো খোলা রাখা সুন্নত।

৬। হাত লাগানো অবস্থায় একবার সামনের দিকে একবার পিছনের দিকে নিবে, এটা সুন্নত।

৭। হাত এমন ভাবে ঝাড়বে যেন আলগা ধুলা ঝরে যায়। 

৮। সম্পূর্ণ মুখমণ্ডল এই হাত দ্বারা মাসেও করবে,  এটা ফরজ।

৯। দাঁড়িখিলাল করা সুন্নত।

১০। আবার মাটিতে পূর্বের ন্যায় হাত লাগাবে এবং হাত ঝাড়বে।

১১। প্রথমে ডান হাত কোনই সহ মাসেহ করবে  এবং পরে বাম হাত কনুইসহ মাসেহ করবে।  এটা ফরজ।

১২। মাসেহ করার সুন্নত তরিকা হল-  বাম হাতের চার আঙ্গুলের পেট ( বৃদ্ধ আঙ্গুল ব্যতীত)  ডান হাতের চার আঙ্গুলের পিঠে রাখবেএবং ডান হাতের পিঠের ওপর দিয়ে কুনীর দিকে টেনে নিয়ে যাবে।  পরবর্তীতে বাম হাতকে উল্টে  বাম হাতের তালু এবং বৃদ্ধ আঙ্গুলের পেট দিয়ে ডান হাতের পেটের দিক থেকে আঙ্গুলের দিকে এমন ভাবে টেনে নিয়ে যাবে যেন বাম হাতের বৃদ্ধ আঙ্গুলের পেট ডান হাতের বৃদ্ধ আঙ্গুলের পিঠের ওপর দিয়ে চলে যায়।  অনুরূপভাবে  ডান হাত দিয়ে বাম হাত মাসেহ করতে হবে।

১৩। তেমন এর মধ্যেও ওযুর নেয় একের পর এক অঙ্গগুলো কন্টিনিউ করে যাওয়া সুন্নত।

কোন কোন বস্তু দ্বারা তায়াম্মুম করা যায়

পাক মাটি,  কংকর,  বালি,  চুনা,  মাটির তৈরি কাঁচা অথবা পাকা ইট,  ধুলাবালি, মাটি পাথর ও ইটের তৈরি দেওয়াল, লাকড়ি বা কাপড়ে অথবা অন্য কোন পাক বস্তুতে ধুলাবালি লেগে থাকলে এইসব বস্তু দ্বারা তায়াম্মুম করা যাবে।

আরও জানতে > ওযুর সময় যে দোয়া পড়তে হয়

তায়াম্মুম কখন করা যাবে। গাড়িতে তায়াম্মুমের নিয়ম

নিম্নলিখিত কারণ ব্যতীত তায়াম্মুম করা জায়েজ হবে না।

১।  পানি এক মাইল অথবা এর চেয়েও দূর হতে হবে।

2। পানির কুপ আছে এবং কুপে পর্যাপ্ত পানিও আছে কিন্তু পানি উঠানোর কোন ব্যবস্থা কোন ব্যবস্থা নেই।

৩।  পানির নিকট কোন হিংস্র ক্ষতিকর প্রাণী অথবা কোন শত্রু থাকলে এবং কাছে গেলে কোন বিপদের আশঙ্কা থাকলে।

৪।  রেলগাড়ি, প্লেন অথবা মোটর গাড়িতে আরোহন অবস্থায় পানি না পাওয়া গেলে অথবা অজু করার সুযোগ না থাকলে  বা অজু করতে গেলে গাড়ি ছেড়ে দেওয়ার ভয় থাকলে তায়াম্মুম করা যাবে। তবে রেলগাড়ি বা যানবাহনে তায়াম্মুম এর জন্য শর্ত হলো ( এক)  রেলগাড়ির অন্য কোন ডাব্বার ( বগিতে)  পানি নেই বা প্রতি মধ্যে এক মাইলের ১.৬৩ কিঃ এর মধ্যে পানি পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। 

৫। পানি ব্যবহারের ফলে রোগবৃদ্ধি অথবা রোগ সৃষ্টির বা স্বাস্থ্যের ওপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টির ভয় হলে।  অবশ্য এসব ব্যাপারে অনর্থক সন্দেহ করে তায়াম্মুম না করাই শ্রেয়।

৬। তবে রোগবৃদ্ধি পাওয়ার অথবা রুগ সৃষ্টি হওয়ার ব্যাপারে নিশ্চিত হলে,  যেমন ঠান্ডা, সর্দি, কাশি  ইত্যাদি রোগে আক্রান্ত লোক শীতকালে ঠান্ডা পানি ব্যবহার করলে ক্ষতি হয়,  এমত অবস্থায় গরম পানি দিয়ে গোসল অথবা অজু করা দরকার কিন্তু গরম পানির সংগ্রহ করতে না পারলে অথবা গরম পানি ব্যবহার করলেও ক্ষতির আশঙ্কা থাকলে তায়াম্মুম করবে।

৭। অল্প পানি থাকায় ওযু করলে পিপাসায় কষ্ট করতে হবে অথবা খাবার পাক করতে অসুবিধার সম্ভাবনা আছে এমত অবস্থায় তায়াম্মুম করা যাবে।

৮।  যে নামাজের কাজা হয় না,  অজু অথবা গোসল করতে গেলে এমন নামাজ ছুটে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিলে।  যেমন  দুই ঈদের নামাজ এবং জানাজার নামাজ।  এইসব নামাজে অজু ব্যতীত তায়াম্মুম  করা যায়।

৯। কোন লোকের গোসলের প্রয়োজন,  কিন্তু গোসল করলে ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে, অজু করলে কোন ক্ষতি হবে না।  তখন সে গোসলের জন্য তায়াম্মুম  করবে এবং প্রত্যেক নামাজের জন্য নতুন করে অজু করে নামাজ পড়বে।  পানির পরিমাণ যদি অল্প হয় ও মাত্র একবার করে মুখ হাত ও পা ধৌত করা যায় এমত অবস্থায় তায়াম্মুম  করবে না।  অজুর অঙ্গ গুলো একবার করে ধৌত করলেই হবে। ওযুর সুন্নত গুলি ছেড়ে দিতে হবে।

১০। রেলগাড়িতে বা প্লেনে ভ্রমণ কালে মাটি ও পানি যদি না পাওয়া যায় তাহলে অজু ও তায়াম্মুম ব্যতীত নামাজ পড়ে নিবে অর্থাৎ  নামাজের নিয়ত ছাড়া শুধু নামাজের মত ওঠা বসা ইত্যাদি করবে। এমনিভাবে কোন লোক জেলখানায় থাকাকালীন সময় মাটি এবং পানি না পেলে ওযু ও তায়াম্মুম বিহীন অবস্থায় নামাজের নেয় পড়বে।  তবে উভয় অবস্থায় পানি পাওয়ার পর দ্বিতীয়বার নামাজ পড়তে হবে।  মানুষের সৃষ্ট কোন অপারগতায় কেউ অপনিত হলে এই হুকুম বলবৎ।  যেমন কোন লোকের জেলখানায় থাকা অবস্থায় অন্য কেউ তার ওযুর পানি বন্ধ করে দিল এবং সেখানে তায়াম্মুমের ব্যবস্থাও করতে না পারলে সে অনুরূপভাবে নামাজের ন্যায় করবে।

তায়াম্মুমের ফরজ কয়টি

তায়াম্মুমের ফরজ তিনটি।
১।  নিয়ত করা
২।  সমস্ত মুখমন্ডল মাসেহ করা। 
৩। উভয় হাতের কনুইসহ মাসেহ করা।

No comments

Powered by Blogger.