Header Ads

Header ADS

নাপাক শরীর ও কাপড় পাক করার নিয়ম

যে সমস্ত নাপাক চর্ম চক্ষু দ্বারা দেখা যায় এবং তা থেকে শরীর কাপড় ও খাদ্য বস্তু পাক রাখা উচিত এই নাপাকি গুলোকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়।

১।  নাজাত সাথে গলিজা অর্থাৎ যে নাপাকির হুকুম শক্ত।
২।  নাজাসাতে খফিফা অর্থাৎ যার হুকুম কিছুটা হালকা। 

যেমন মানুষের মল-মূত্র, মানুষ ও প্রাণীর রক্ত, বীর্য মদ সব ধরনের পশুর পায়খানা সব ধরনের হারাম পশুর পেশাব এবং পাখির মধ্যে শুধু হাঁস ও মুরগির বিষ্টা হলো নাজাসাতে গলিজা অর্থাৎ শক্ত না নাপাক। আর গরু মহিষ বকরি ইত্যাদির সকল হালাল পশুর পেশাব কাচিল ইত্যাদি সকল হারাম পাখির বিষ্ঠা এবং ঘোড়ার পেশাব হলো নাজাসাতে খফিফা অর্থাৎ হালকা নাপাক।

শরীর পাক করার দোয়া

শরীর বা কাপড় পাক করার জন্য কোন দোয়া পড়তে হয় না। কিন্তু শরীয়তের প্রতিটি কাজ করার পূর্বে বিসমিল্লাহ বলা মুস্তাহাব।  তাই শরীর ও কাপড় পাক করার পূর্বে বিসমিল্লাহ বলে কাজটি শুরু করা উচিত।

কাপড় পাক করার নিয়ম

কঠিন নাপাক যা দেখা যায়, পায়খানা রক্ত বীর্য যা শরীর ও কাপড়ে লাগলে তা পাক করার নিয়ম হলো নাপাকিকে এমন ভাবে ধৌত করবে যেন দাগ লেগে না থাকে।  এর থেকে দুইবার দোয়ার কারণে দাগ চলে গেলেও পাক হয়ে যাবে তবে তিনবার ধৌত করা মুস্তাহাব। তিনবার দুয়ার পরেও নাপাকি পরিষ্কার হওয়ার পরেও যদি কিছু দাগ বা দুর্গন্ধ থাকে তাতে কোন দোষ নেই। সাবান বা সাবান জাতীয় বস্তু লাগিয়ে দাগ বা দুর্গন্ধ দূর করা ওয়াজিব নয়।  তবে দূর করা উত্তম।

তরল নাপাক দূর করার নিয়ম

পানির মতো তরল নাপাক শরীর বা কাপড়ে লাগলে তা পাক করার নিয়ম হলো তিনবার ধুতে হবে এবং প্রত্যেকবার কাপড় ভালো করে নিংড়াতে হবে।  শেষবার খুব জুড়ে নিংড়াতে হবে,  ভালো মতো না নিংড়ালে কাপড় পাক হবে না।

আপনার কাপড় বা শরীরে গারো তরল নাপাক লাগলে ধোয়া ব্যতীত অন্য কোন উপায়ে পাক করা যায় না।  পানি দ্বারা ধুয়ে যে রূপ পাক করা যায় তদ্রুপ পানির ন্যায় তরল এবং পাক গোলাপ জল, রস,  সিরকা প্রভৃতি জিনিস দ্বারা ধুয়ে পাক করা যায়।  তবে জিনিস যদি তৈলাক্ততা দ্বারা ধৌত করলে পাক হবে না যেমন দুধ ঘি তেল ইত্যাদি।

ওয়াশিং মেশিনে কাপড় ধোয়ার নিয়ম

আপনার যদি একটি ওয়াশিং মেশিন থাকে এবং ওয়াশিং মেশিনের মাধ্যমে আপনি কাপড় পরিষ্কার করে থাকেন তাহলে আপনাকে সাবধানতা অবলম্বন করে কাপড় গুলোকে পরিষ্কার করতে হবে।  ওয়াশিং মেশিন যেহেতু নিয়ম মত কাপড় গুলোকে নিংড়াতে পারেনা এবং নাপাক কাপড়ের সাথে থাকা, পাক কাপড় একত্রে ভেজানোর কারণে পাক কাপড় ও নাপাক হয়ে যায়।  তাই ধোয়ার পূর্বে বা পড়ে নাপা কাপড়গুলিকে পৃথকভাবে নিয়ম মত ধুয়ে পাক করে নিতে হবে।  যদি কেউ ওয়াশিং মেশিনে  তিনবার নিয়ম মত পানি ঢেলে নিংড়িয়ে কাপড় পরিষ্কার করে তাহলে কাপড় পাক হয়ে যাবে।

লন্ডিতে কাপড় পাক করার নিয়ম

লন্ডিতে সাধারণত অনেক কাপড় একসাথে ভিজিয়ে রাখে,  এর মধ্যে কোন কাপড় নাপাক থাকলে পাক কাপড়গুলি নাপাক হয়ে যাবে,  তখন সবগুলি নিয়ম মত দুইয়ে পাক করা প্রয়োজন।  কিনা তা নিশ্চিত করে বলা কঠিন।  তাই লন্ড্রির মাধ্যমে কাপড় ধোলাই করার ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন।  তবে একান্ত কেউ পাক কাপড় দিলে তা নাপাক হয়েছে ধরা হবে না।  পক্ষান্তরে নাপাক কাপড় দিলে তা পাকও ধরা হবে না।  ড্রাই ওয়াশের হুকুমও ঠিক এরকম।

দুই পুরত বিশিষ্ট কাপড়ের পাক করার নিয়ম

দুই পুরাত বিশিষ্ট কাপড়ের যদি এক দিকে নাপাক এবং অন্যপুরতে পাক থাকে এমত অবস্থায় উভয় পাল্লা যদি একত্রে সেলাই করা হয় তাহলে পাক পুরোত এর অপর নামাজ পড়া হবে না।  সেলাই করা না হলে নাপাক পুরো নিচে রেখে অপর নামাজ পড়া যাবে।  তবে শর্ত এই যে পাক পুরত এত মোটা হওয়া চাই যাতে নাপাক পুরোতের ওপর যে নাপাকি রয়েছে তার রং এবং গন্ধ টের পাওয়া না যায়। বিছানার এক কর্নারে  নাপাকি থাকলে অন্য কর্নারে নামাজ পড়া করা ঠিক হবে না।

আরো জানতে > ফরজ গোসলের দোয়া বাংলায়

না ধুয়ে কাফেরদের কাপড়ে বা বিছানায় নামাজ পড়া মাকরূ।

তোষক বা লেপ পাক করার নিয়ম

তোষক বা লেপে যদি মল-মূত্র বা অন্য কোন প্রকার নাপাক বস্তু লেগে যায় তাহলে পানি দ্বারা ধৌত করতে হবে।  যদি নিংড়ানো না যায় তাহলে ভালো করে তিনবার পানি প্রবাহিত করতে হবে।  প্রত্যেকবার পানি প্রবাহিত করার পর এমনভাবে রেখে দেবে যেন সমস্ত পানি ঝরে যায়।  তারপর আবার পানি প্রবাহিত করবে,  এভাবে তিন বার করলেই পাক হয়ে যাবে তোলা ইত্যাদি বের করে ধৌত করার দরকার নেই।

আসবাবপত্র পাককরার নিয়ম

যদি আসবাবপত্রে নাপাক লেগে যায় তাহলে নিংড়ানো যায় না যেমন থালা-বাসন, কলস, খাট, মাদুর, জুতো ইত্যাদি।  এগুলো পাক করার নিয়ম হলো একবার তা ধুয়ে এমনভাবে রেখে দিতে হবে যেন সমস্ত পানি ঝরে যায় এবং পানির ফোঁটা পড়া বন্ধ হয়ে যায়,  তারপর পূর্বের ন্যায় আরেকবার করবে,  এভাবে তিনবার ধৌত করলে জিনিসগুলো পাক হয়ে যাবে। নাপাক ছুঁড়ি চাকু বা হাড়ি পাতিল জ্বলন্ত আগুনে পোড়ালেও পাক হয়ে যায়। কুকুর কোন পাত্রে মুখ দিলে তা পাক করার নিয়মঃ  কুকুর কোন পাত্রে মুখ দিলে তা নাপাক হয়ে যায়,  তিনবার ধৌত করলেও তা পাক হয়ে যায় কিন্তু সাতবার ধৌতো করা উত্তম।  এরপর আরেকবার মাটি দ্বারা মেজে ফেললে সব থেকে বেশি উত্তম।

জমিন পাক করার নিয়ম

জমিন বা মাটিতে নাপাক লাগলে তা তিনবার পানি প্রবাহিত করে দিলে পাক হয়ে যায়।  কিন্তু নাপাক যদি এমনভাবে শুকিয়ে যায় যে নাপাক এর চিহ্ন না থাকে তবুও পাক হয়ে যায় কিন্তু তার ওপর নামাজ পড়া যায় কিন্তু ওই মাটি দ্বারা তেমন করা ঠিক নয়। জমিনের সঙ্গে যে ঘাস লাগানো আছে তাও জমিনের মতই অর্থাৎ শুধু সকালে এবং নাপাক এর চিহ্ন চলে গেলে পাক হয়ে যাবে এবং তার ওপর নামাজ পড়া দুরস্ত হবে।  কিন্তু কাটা ঘাস দোয়া ব্যতীত পাক হবে না। গোবরধারা লেপে জমিনের ওপর পাক বিছানা দিছে নামাজ পড়া দুরস্ত নয়।

No comments

Powered by Blogger.