নামাজের ফজিলত ও গুরুত্ব
ঈমান আনার পর সর্বপ্রথম দাবি নামাজ
একজন মুসলমানের ঈমান আনার পর সর্বপ্রথম দাবি এই যে, সে সমাজে নামাজ প্রতিষ্ঠা করবে। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেছেন। নিশ্চয়ই আমি আল্লাহ। আমি ছাড়া কোন ইলাহ নেই, অতএব শুধু আমারই দাসত্ব করো, আমার স্মরণে নামাজ প্রতিষ্ঠা কর। সূরা ত-হা ১৪।
নামাজের গুরুত্ব
আকাইদ শাস্ত্রের আলোচ্য বিষয় এই যে, যেমন আল্লাহর সত্তা ও গুণাবলীর ওপর ঈমান সমগ্র দিনের উৎস, তেমনিভাবে আমলের ক্ষেত্রে নামাজ হচ্ছে দিনের আমলের ভিত্তি। এটা এই কারণে বলা হয় যে, কুরআনের সব এবাদতের মধ্যে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ প্রদান করেছেন এই নামাজে এবং এই নামাজ প্রতিষ্ঠা করার ওপর এতই গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে যে, এই নামাজের অপরই যেন সমস্ত দিন নির্ভরশীল। নামাজ ব্যতীত অন্য সব ইবাদত বিশেষ সময়ে এবং বিশেষ ব্যক্তিবর্গের ওপর ফরজ হয়ে থাকে।
আরো জানুন > জুমার নামাজ কত রাকাত ও জুমার নামাজের নিয়ত
যেমনঃ হজ এবং যাকাত সম্পদশালীদের ওপর ফরজ। এবং রোজা শুধু বছরে একমাস ফরজ। কিন্তু নামাজ এমন একটি এবাদত যা যার জন্য ঈমান ছাড়া আর কোন শর্ত নেই। ঈমান আনার সঙ্গে সঙ্গেই প্রত্যেক বালেক এবং জ্ঞানবান ব্যক্তির ওপর নামাজ ফরজ হয়, সে মহিলা হোক বা পুরুষ আমির হোক বা ফকির স্বাস্থ্যবান বারোগি মুকিম হোক বা মুসাফির। প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ, যা আদায় করতেই হবে। এমনকি সহস্র যুদ্ধক্ষেত্রেও যখন শত্রু মোকাবেলায় প্রতিটি মুহূর্ত সম্ভাবনা হয় ঠিক তখনও নামাজ আদায় করতেই হবে। এবং এই নামাজ আদায়ের ব্যাপারে জামাতের গুরুত্ব অপরিসীম জামাতে নামাজ আদায়ের ব্যাপারে গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছে। নামাজের প্রতি তাকিত এবং প্রেরণার পাশাপাশি এর গুরুত্ব বোঝাতে পবিত্র কুরআনে ভয়ানক পরিণাম এবং বিরাট লাঞ্ছনার ভয় দেখানো হয়েছে যা নামাজ পরিত্যাগকারীর অবশ্যই ভোগ করবে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামাজের গুরুত্ব ও ফজিলত এবং পরিত্যাগ করার ভয়ানক শাস্তির ওপর বিভিন্নভাবে হাদিসে বর্ণনা করেছেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন মুমিন এবং কুফুরের মধ্যে নামাজী পার্থক্যকারী সহীহ মুসলিম।
নামাজের ফজিলত
যে ব্যক্তি নিয়মিত নামাজ আদায় করবে বিচারের দিনের সে নামাজ তার জন্য নূর এবং ঈমানের প্রমাণ হবে এবং মুক্তির উপায় হবে। যে ব্যক্তি নামাজ আদায় করবে না এই নামাজ তাকে দোযখের আগুন থেকে রক্ষা করবে না এমন লোক শেষ বিচারের দিনে ফিরাউন কারণ হামান উবাই বিন খালাপের সঙ্গী হিসেবে গণ্য হবে। আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু থেকে বর্ণিত একবার শীতের সময় যখন গাছের পাতা ঝরে, রাসূল সাল্লাল্লাহু সাল্লাম বাইরে এলেন এবং একটি গাছের দুটি ডাল ধরে ঝাঁকি দিলেন এবংঝরঝর করে শুকনা পাতা পড়তে লাগলো। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু সাল্লাম বললেন, হে আবুজর যখন কোন মুসলমান আন্তরিকতার সঙ্গে নামাজ আদায় করে, তার গুনাহ ঠিক এভাবে ঝরে পড়ে যেমন এ গাছের পাতাগুলো ঝরে পড়েছে- সুনানে আহমদ। একবার রাসূল সাল্লাল্লাহু সাল্লাম সাহাবীদের প্রশ্ন করলেন, যদি তোমাদের মধ্যে কারো ঘরের পাশ দিয়ে কোন নদী প্রবাহিত হয় যার মধ্যে সে প্রতিদিন পাঁচবার গোসল করে, তাহলে বল তার দেহে কোন ময়লা থাকবে কি? সাহাবীগণ বললেন না। তার দেহে কোন ময়লা থাকতে পারে না। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনএই অবস্থা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের। আল্লাহ এসব নামাজের বিনিময় তার গুনাহ গুলো ক্ষমা করে দিবেন। সহীহ বুখারী এন্ড মুসলিম।
No comments
Post a Comment