Header Ads

Header ADS

বর্তমানে কত টাকা থাকলে যাকাত ফরজ হয়। যাকাতের হিসাব,যাকাত কাকে বলে

বর্তমানে কত টাকা থাকলে যাকাত ফরজ হয়, যাকাত, যাকাত শব্দের অর্থ কি,যাকাতের হিসাব,যাকাত কাকে বলে।


যাকাতের পরিচয়।

যাকাত ইসলামের গুরুত্ব রোকন( স্তম্ভ)।  ইসলামের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ও অপরিহার্য এবাদত হল সালাত ও যাকাত।

যাকাত শব্দের অর্থ

যাকাত অর্থ পবিত্রতা, পবিত্র করা,  বৃদ্ধি পাওয়া, যাকাতের আরও একটি অর্থ হল পরিশুদ্ধ করা।  যাকাতের মাধ্যমে কৃপণতা থেকে মন পবিত্র হয়।

যাকাত কাকে বলে

সম্পদের একটি নির্দিষ্ট অংশ দান করাকে যাকাত বলে।  নিসাব পরিমাণ সম্পদ এক বছর পরিমাণ অতিবাহিত হলে তার যাকাত ২.৫% হারে নির্ধারিত খাতে যাকাত প্রদান করা ফরজ।

যাকাতের নিসাব কি যাকাতের খাত কয়টি ও কি কি

নিসাব অর্থ পরিমান বা সংখ্যা কমপক্ষে যে পরিমাণ সম্পদ থাকলে যাকাত ফরজ হয় তাকে নিসাব বলে। যাকাত যোগ্য সম্পদের প্রকার যেমন ভিন্নতা আছে তেমনি ভাবে বিভিন্ন প্রকার যাকাতযোগ্য সম্পদের হিসাব ও ভিন্ন ভিন্ন। রসুলে আকরাম সাঃ বর্ণিত হাদিস অনুযায়ীঃ স্বর্ণের হিসাব ৮৫ গ্রাম বা ৭.৫ ভরি। রুপার নিসাব ৬০০ গ্রাম বা ৫২.৫ ভরি। উটের হিসাব  ৫ উট কমপক্ষে। গরুর নিসাব ৩০ টি  গরু কমপক্ষে। ছাগলের হিসাব  ৪০ টি কমপক্ষে। ফসলের হিসাব  ১৭ মন মতান্তরে ২৫ মন। সুতরাং কারো নিকট নিসাব পরিমাণ স্বর্ণ রূপও বা সমপরিমাণ অর্থ পশু বা ফসল থাকলে নির্ধারিত হারে যাকাত প্রদান করতে হবে।

যাকাতযোগ্য সম্পদ

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বর্ণনা ও বাস্তবায়নের আলোকে মোট ছয় প্রকার সম্পদের যাকাত প্রদান করতে হয়।

১।  স্বর্ণ বা রুপা
২। নগদ টাকা
৩।  ব্যবসায়িক পণ্য
৪।  চতুষ্পদ পশু
৫।  ফল ও ফসল
৬।  খনিজ সম্পদ। 

মেয়াদ বা বছর পূর্তিঃ  স্বর্ণ-রুপ্পো নগদ টাকা বাণিজ্যিক পণ্য ও পালিত পশুর ক্ষেত্রে উৎপাদন ও বৃদ্ধি নির্ণয়ের জন্য যৌক্তিক ও বৈজ্ঞানিক মানদন্ড হলো বর্ষপূর্তির হিসাব। অন্যদিকে ফসলের ক্ষেত্রে পরিপক্ক হওয়া বা ফসল কর্তন করাই হলো এর জন্য বর্ষপূর্তি।  শর্ত হলঃ  পূর্ণ এক বছর( পূর্ণ এক চন্দ্র বছর ৩৫৪ দিন)  মালিকানায় থাকতে হবে।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,  আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু।  যদি কেউ কোন সম্পদ লাভ করে তাহলে উক্ত সম্পদ তার মালিকানায় এক বছর পূর্ণ না হলে যাকাত ফরজ হবে না তিরমিজি-৬৩১। হযরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি এক বছর পূর্ণ হওয়ার আগে কোনো সম্পদের যাকাত নেই।  ইবনে মাজাহ ১৭৯২।

আরও জানতে > কোন খাতে যাকাত দেওয়া যায় না  

কেউ যদি সৌর বছর হিসাবে যাকাত দিতে চায় তাহলে অবশ্যই তাকে আরও অতিরিক্ত ১০-১১ দিনের যাকাত আদায় করতে হবে।  যেহেতু চন্দ্র বছর থেকে সৌর বছর ১০ অথবা ১১ দিন বেশি হয়।সে ক্ষেত্রে যাকাতের হার হবে ২.৫৭%। কোন ব্যক্তি যদি বছর পূর্তির আগে যাকাত দিতে চায় তাহলে সে যাকাত দিতে পারবে।

নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সাহাবীগণ এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে তিনি এই ব্যাপারে অনুমতি দেন।  তিরমিজি-৬৭৮,  আবু দাউদ-১৬২৪, ইবনে মাজাহ- ১৭৯০।

যাকাতের খাত কয়টি

মহান আল্লাহ তা'আলা সূরা তাওবার ৬০  নং আয়াতে যাকাতের খাতসমূহ উল্লেখ করেছেন মোট ৮ টি। এই সদকা গুলো তো আসলে ফকির-মিসকিনদের জন্য আর যারা সদকা সংক্রান্ত কাজে নিযুক্ত যাদের মন জয় করার প্রয়োজন তাদের জন্য।  এছাড়া দাস মুক্ত করা আল্লাহর পথে এবং মুসাফিরের উপকারের জন্য।  এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে একটি বিধান এবং আল্লাহ সবকিছু জানেন তিনি সর্বজ্ঞ। 

যাকাত ফরজ হওয়ার শর্ত

১।  মুসলিম হওয়া
২।  স্বাধীন হওয়া
৩।  সম্পদের পূর্ণ মালিকানা থাকা
৪।  নিসাব পূর্ণ হওয়া
৫।  বর্ষ-পূর্তি হওয়া ( চন্দ্র বা সৌর)
৬।  প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া
৭।  মানসিক ভারসাম্যপূর্ণ না হওয়া
৮। ঋণ মুক্ত হওয়া।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তাআলা তোমাদের ওপর যাকাত ফরজ করেছেন,  তা যেন ধনীদের থেকে নিয়ে দরিদ্রের মাঝে বন্টন করা হয়।  প্রচলিত প্রশ্নের আলোকে যাকাত।  নগদ টাকার যাকাতঃ  নগদ টাকার ক্ষেত্রে স্বর্ণ বা রূপের মূল্য ধরে যাকাত আদায় করতে হবে।

বাণিজ্যিক পণ্যের যাকাত

নিসাবের ক্ষেত্রে একই কথা প্রযোজ্য তবে বাণিজ্যিক পণ্যের যাকাতের ক্ষেত্রে মূলধন ও লভ্যাংশ উভয়ের হিসাব একত্রিত করে যাকাতের হিসাব নির্ধারিত হবে,  শুধু লভ্যাংশ হিসাব করলেহবে না। উল্লেখ্য যে আসবাবপত্র গাড়ি মেশিনের জন্য যা ব্যয় হয় তার যাকাত দিতে হবে না। আমরা কেনা বাঁচার জন্য যে পণ্য প্রস্তুত করতাম রাসূল(সাঃ)  সেটার যাকাত দেওয়ার নির্দেশ দিতেন।  আবু দাউদ ১৫৬২।

ঋণের যাকাত

ঋণ গৃহীতার যাকাত,  ব্যক্তিগত বা পরিবার খরচ স্কুল কলেজ কেউ যদি ঋণ গ্রহণ করেন এবং তিনি সাহেবে নেসাব হন তাহলে তার যাকাতযোগ্য সম্পদ বাদ দিয়ে যাকাত হিসাব করতে হবে।  উল্লেখ্য যে ঋণ পরিষদের ওয়াদার যাকাত প্রদানের বর্ষপূর্তি আগে হলে আগে ঋণ পরিশোধ করা ফরজ। ঋণের দাতার যাকাতঃ  ঋণের টাকা বছর পূর্তির পূর্বে যদি পাওয়ার নিশ্চয়তা থাকে তবে সেই টাকা তার হস্তগত টাকা বলে বিবেচিত হবে।  নিসবের ক্ষেত্রে নগদ টাকার সাথে যুক্ত হবে এবং যাকাত দিতে হবে। যদি ঋণের টাকা পাওয়া যাবে তার নিশ্চয়তা না পাওয়া যায় তাহলে যে বছর ঋণের টাকা পাওয়া যাবে সেই বছর তার নগদ টাকার সাথে ঋণের টাকা হিসাব করতে হবে। আপনার যেসব ঋণ ফেরত পাওয়ার প্রত্যাশা করেছেন,  বছর পূর্তিতে আপনার ওপর যাকাত প্রযোজ্য হবে।  যে ব্যক্তি কাউকে ঋণ প্রদান করল এবং সে তা পাবে বলে নিশ্চিত,  তাহলে তার ওপর ঋণের যাকাত দেওয়া আবশ্যক।

ব্যাংকে জমা টাকার যাকাত

১। ব্যাংকে জমা টাকা যাকাত দিতে হবে।

২। শেয়ার ও ঋণপত্র ব্যবসায়ের উদ্দেশ্যে অর্থবিনি করেছেন তার যাকাত দিতে হবে।

৩। বন্ড প্রাইজ বন্ড ও ইউনিট সার্টিফিকেট ১৯৮৩ সালের (বাংলাদেশ সরকারের যাকাত বোর্ডের সিদ্ধান্ত মোতাবেক) বাজার মূল্যের ওপর যাকাত দিতে হবে। 

প্রভিডেন্ট ফান্ড গ্রাজুইটি চাকরির সাথে সম্পর্কিত বিভিন্ন জমাকিত ফান্ডের যাকাত

এ ধরনের ফান্ডের টাকা নিজের আয়ত্তে না আসা পর্যন্ত যাকাত আদায় করতে হবে।

বি ডি পি এস এর টাকার যাকাত

এম এস এস/ ডিপিএস এর টাকা যখন খুশি তখন উত্তোলন করা যায় তাই এ ধরনের টাকা হিসাবের মালের সাথে হিসাব করে যাকাত দেওয়া লাগবে।

বীমার অপর যাকাতঃ বীমা কৃত ব্যক্তি হাতে না আসার আগ পর্যন্ত যাকাত দিতে হবে না। 

যাকাত কি দিয়ে আদায় করতে হবে

সকল দিক বিবেচনা করলে যাকে যাকাত দেবেন তার সমস্যা ব্যাপক এজন্য অর্থ/ টাকার মাধ্যমে যাকাত দেওয়া আছে।  এতে করে ব্যক্তি তার প্রয়োজনের আলোকে খরচ করতে পারবে।  এবং তাদের ধনীদের সম্পদের যাচনাকারী অবঞ্চিত লোকদের জন্য সুপ্রতিষ্ঠিত অধিকার রয়েছে।

ফসলের যাকাত পরিশোধ করো তা ঘরে তোলার দিন

পালিত পশুর নিসাব।

ক) ছাগল ভেরা দুম্বা ইত্যাদি।
খ) গরু মহিষ।
গ)  উট।

ছাগল ভেড়া দুম্বার যাকাতের পরিমাণঃ 

১ থেকে ৩৯ পর্যন্ত ছাগলের যাকাত নেই।
৪০ থেকে ১২০ পর্যন্ত একটি ছাগল।
১২১ থেকে ২০০ টির মধ্যে দুইটি ছাগল। 
এভাবে সংখ্যা যত বাড়তে থাকবে পাঁচশত এর উপরে হলে প্রতি ১০০টির জন্য একটি ছাগল দিতে হবে। 

গরু মহিষের যাকাতের পরিমাণ

১ থেকে ২৯ টি যাকাত নেই।
৩০ থেকে ৩৯ টি একটি দশ বছরের গুরুম অফিস।
৪০ থেকে ৪৯ টি একটি মুসিন্নাহ ২০ বছরের গুরু মহিষ।

যেসব সম্পদের উপর যাকাত প্রযোজ্য নয়

১। ব্যবহার্য জমি ২।  দোকান কারখানা গুদাম ও আসবাব পত্র। ৩।  বসবাসের ঘরবাড়ি ৪।  এক বছরের কম বয়সী গবাদি পশু। ৫।  ব্যবহারের পোশাক ৬।  অধ্যয়নের বই পত্র ৭।  গৃহস্তারের জিনিসপত্রের এবং অফিসের জিনিসপত্র ৮।  গৃহপালিত হাঁস মুরগি ও পাখি। ৯।  চলাচলের বস্তু ও গাড়ি ১০।  যুদ্ধ অস্ত্র ও সরঞ্জাম ১১।  নিসাব পূর্ণ হয়নি যাকাতযোগ্য সম্পদ। ১২। ব্যবসার জন্য নয় এমন পুকুরের মাছ ১৩। সরকারি সম্পত্তি( মালিক জনগণ গরিব ধনী সব) ১৪।  পরিষদের জন্য জমাকিত সম্পদ।  


No comments

Powered by Blogger.